১১৬ নং কাদম্বরী বাংলায় প্রকাশিত হয়েছিল... বাংলা তালিকায় পাওয়া যায়... কিন্তু কোনদিন আমি দেখিনি... যেমন দেখিনি 'কপাল কুণ্ডলা', আম্রপলি ও উপগুপ্ত ইত্যাদি।।
ধ্রুব
হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র। এঁর পিতার নাম
উত্তানপাদ। উত্তানপাদের দুই স্ত্রীর মধ্যে প্রথমা স্ত্রী সুনীতির গর্ভে ধ্রুব আর
দ্বিতীয়া স্ত্রী সুরুচির গর্ভে উত্তম নামক পুত্র জন্ম হয়।
রাজা তাঁর দুই স্ত্রীর ভিতর সুরুচিকে সুনীতি অপেক্ষা বেশী ভাল বাসতেন।
সুরুচির প্ররোচনায় তিনি সুনীতির প্রতি অন্যায় ব্যবহার করে তাঁকে বনবাস দেন।
একদিন রাজা মৃগয়া করতে গিয়ে ঘটনাক্রমে পথ ভুলে সুনীতির নির্জন কুটীরে উপস্থিত হন
এবং সেখানে সুনীতির সাথে মিলিত হলে ধ্রুব জন্মগ্রহণ করেন।
একদিন তাঁর
সৎভাই উত্তম পিতার কোলে বসে ছিলেন।
সেই সময়ে ধ্রুব রাজসভায় উপস্থিত হয়ে পিতার কোলে বসার ইচ্ছা করলে,
বিমাতা
সুরুচি ধ্রুবকে কটুবাক্যে অপমানিত করেন।
ধ্রুব তাঁর মার কাছে গিয়ে এই অপমানের কথা বর্ণনা করলে,
সুনীতি
বললেন যে,
একমাত্র হরিই
দুঃখীদের দুঃখমোচন করতে পারেন।
এরপর ধ্রুব হরির চিন্তা করা শুরু করেন।
একদিন গভীর রাতে তিনি মাকে ত্যাগ করে, হরির সন্ধানে বনে চলে যান এবং হরির সন্ধানে
বনের ভিতর ঘুরতে থাকেন।
হরির সন্ধানে ইনি পূর্বদিকে যেতে যেতে সাত জন মুনিকে দেখতে পান।
তাঁদের কাছে ধ্রুব বললেন,
আমি অর্থ বা
রাজত্ব প্রার্থনা করি না।
আমি এমন স্থান প্রার্থনা করি যা কেউ উপভোগ করে নি।
ঋষিরা এর উত্তরে ধ্রুবকে বিষ্ণুর আরাধনা করতে বলেন।
এরপর ধ্রুব বিষ্ণুর আরাধনায় গভীরভাবে মনোনিবেশ করেন।
এই সময় ইন্দ্র ও অন্যান্য দেবতারা এই তপস্যায় ভীত হয়ে,
নানা
উপায়ে ধ্রুবের তপস্যা ভাঙার চেষ্টা করে বিফল হনা।
অবশেষে তাঁরা বিষ্ণুরই শরণাপন্ন হলেন।
বিষ্ণু দেবতাদের আশ্বাস দিয়ে ধ্রুবের কাছে এসে বললেন,
আমিই
হরি,
তোমার তপস্যায়
আমি প্রীত হয়েছি,
তুমি বর গ্রহণ
কর।
ধ্রুব বললেন,
আমি যেন আপনার
স্তব করতে পারি,
এই বর আমাকে
দান করুন।
বিষ্ণু বললেন তুমি পূর্বে এমন একটি স্থান প্রার্থনা করেছিলে যা কেউ উপভোগ করে নি।
এরপর বিষ্ণু ধ্রুবর পরিচয় দিয়ে বলেন,
তুমি আগে এক
ব্রাহ্মণপুত্র ছিলে।
তুমি এক রাজপুত্রের ঐশ্বর্য দেখে রাজপুত্র হতে চেয়েছিলে।
তাই তুমি রাজা উত্তানপাদের গৃহে জন্মগ্রহণ করেছ এবং আমাকে আরাধনা করে এখন তুমি
মুক্তি পেয়েছ।
এরপর বিষ্ণু বললেন যে, তুমি সকল তারা ও গ্রহদের উপরে,
তাদের
আশ্রয়স্বরূপ হয়ে থাকবে।
এই স্থানের নাম হবে ধ্রুবলোক।
এরপর ধ্রুব পিতার রাজ্য লাভ করেন।
তিনি
শিশুমারের কন্যা ভ্রমিকে
বিবাহ করেন। এঁদের পুত্রের নাম হলো
কল্প ও
বৎসর।
যথাসময়ে ধ্রুব দেহত্যাগ করলে বিষ্ণু প্রদত্ত ধ্রুবলোকে প্রস্থান করে নক্ষত্ররূপে
প্রতিষ্ঠিত হন।
অষ্টবক্র মুনি - ঋষি আরুণির এক আশ্রম ছিল। সেখানে বৈদিক পাঠ নিতেন তাঁর কন্যা সুজাতা। তপোবনের শিষ্যদের মাঝে একজন ছিলেন কাহোড়া। আরুণির সম্মতিতেই সুজাতার পাণিগ্রহন করেন ব্রাহ্মণপুত্র কাহোড়া।
বিয়ের পরে অন্তঃসত্ত্বা হলেন সুজাতা। মায়ের গর্ভে থাকতে থাকতেই বেদজ্ঞান লাভ করতে থাকেন সেই শিশু। একদিন একসঙ্গে স্তোত্রপাঠ করছিলেন সুজাতা-কাহোড়া। সংস্কৃত শব্দ উচ্চারণে ভুল করে ফেলেন কাহোড়া। মায়ের গর্ভ থেকে পিতার ভুল শুধরে দেন অনাগত শিশু।
এত স্পর্ধা ! কুপিত হলেন কহোড়া। অভিশাপ দিলেন। এই শিশু যখন ভূমিষ্ঠ হবে‚ তাঁর দেহে থাকবে মোট আটটি বক্র বা বাঁক।
যথাসময়ে জন্ম নিলেন সুজাতার পুত্রসন্তান। বিফলে যায়নি পিতার অভিশাপ। দেহটি মোট আটটি স্থানে বাঁকা ছিল। সেই থেকে তাঁর নামকরণ হয় অষ্টাবক্র। দুই মহাকাব্য রামায়ণ‚ মহাভারত ছাড়াও বিভিন্ন পুরাণে উল্লেখ আছে অষ্টাবক্র মুনির।
বাল্মীকি রামায়ণে বর্ণিত‚ রাজা দশরথ স্বর্গ থেকে ফিরে এসে পুত্র রামচন্দ্রকে শোনাচ্ছেন অষ্টাবক্র-কাহোড়া উপাখ্যান। অধ্যাত্ম রামায়ণে আছে‚ অরণ্যপর্বে এক কবন্ধ এসে রামলক্ষ্মণকে বলছেন‚ তিনি আসলে ছিলেন এক গন্ধর্বকুমার। অষ্টাবক্র মুনিকে দেখে হেসেছিলেন বলে অভিশপ্ত হন। পরে ক্রোধ প্রশমিত হলে অষ্টাবক্র বলেছিলেন ত্রেতা যুগে রামচন্দ্র এসে তাঁকে শাপমুক্ত করবেন। তাই তিনি রামচন্দ্রের আশীর্বাদ নিতে এসেছেন। যাতে শাপমুক্ত হয়ে আবার কবন্ধ থেকে গন্ধর্বকুমার হতে পারেন।
পুরাণে বলা হয়েছে‚ একবার রাজা জনকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন অষ্টাবক্র মুনি। কিন্তু তাঁর আকার-আয়তন দেখে রাজা জনক প্রথমে বেশি গুরুত্ব দেননি। স্থির করেন সভাপণ্ডিত বন্দিনের সঙ্গে নবাগতর বাক-লড়াই দেখবেন। সেইমতো শুরু হল মৌখিক দ্বন্দ্ব। শেষ পর্যন্ত জয়ী হলেন অষ্টাবক্র মুনিই।
তাঁর রচনার মধ্যে সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য হল অষ্টাবক্র গীতা। অর্থাৎ অষ্টাবক্রের সঙ্গীত বা গান। সেখানেও বিশদে আলোচিত হয়েছে আত্মন ও ব্রহ্মণের মধ্যের সম্পর্ক। প্রাসঙ্গিকভাবেই এসেছে দ্বৈত ও অদ্বৈতবাদ। এই গ্রন্থের আর এক নাম অষ্টাবক্র সংহিতা।
Thanks for the story and the information.
ReplyDeleteDarun. Ae copy tir o nam dekhechhi. Kokhono chokh e dekhini.
ReplyDeleteএটা মাঝে মাঝে পাওয়া যায় ।
Deleteএকুশে পা দিয়েই চমক দেখালেন তো... এ তো সেই 'ইন্দ্রজাল' যা পাঠকের মনে 'অমর' হয়ে থাকবে
ReplyDeleteহা:হা:হা:.
DeleteThanxs Indra Da.
ReplyDeleteWelcome
Delete