বীর অভিমুন্যের বীরত্ব♦
কুরুবংশের রাজকুমার অভিমন্যু মহাভারতের অন্যতম উল্লেখযোগ্য চরিত্র ; যিনি
সততা,নিষ্টা ও সাহসীকতায় চির অমর হয়ে আছেন।রাজকুমার অভিমুন্য মধ্যম পান্ডব
অর্জুন এবং শ্রীকৃষ্ণের ভগ্নী যাদব রাজকুমারী সুভদ্রার পুত্র।সেই দিক থেকে
বীর অভিমুন্য ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের ভাগিনেয়।তাছাড়াও তিনি ছিলেন মৎস্য রাজকন্যা উত্তরার স্বামী।অভিমুন্য শৌর্যে বীর্যে ছিলেন তাঁর পিতা অর্জুন ও পিতামহ ইন্দ্রের সমতুল্য।
অর্জুনের বারো বছরের ব্রহ্মচর্য ও বনবাস সম্পূর্ণ হওয়ার সময় অভিমন্যুর
জন্ম হয়। মাতা সুভদ্রার গর্ভে থাকতেই তাঁর শিক্ষা শুরু হয়েছিল।
গর্ভাবস্থায় সুভদ্রা অর্জুনের নিকট চক্রব্যূহে প্রবেশের প্রণালী শুনতে
শুনতে ঘুমিয়ে পড়ায় তিনি আর চক্রব্যূহ হতে বের হওয়ার কৌশল শুনতে পারেন
নি।তাই অভিমন্যু কেবল চক্রব্যূহে প্রবেশ করতে জানতেন, বাহির হতে জানতেন
না।পান্ডবগণের বনবাস ও অজ্ঞাতবাসের কারণে অভিমন্যু তাঁর বাল্যকাল দ্বারকায়
মাতুলালয়ে অতিবাহিত করেন। সেখানে কৃষ্ণ ও বলরামের অভিভাবকত্বে তিনি
কৃষ্ণপুত্র প্রদ্যুম্ন এবং যাদববীর কৃতবর্মা ও সাত্যকীর নিকট অস্ত্রশিক্ষা
গ্রহণ করেন।অজ্ঞাতবাসকালে
পঞ্চপান্ডব ও দ্রৌপদী মৎস্যরাজ বিরাটের নিকট ছদ্মবেশে আশ্রয় গ্রহণ করেন।
তেরো বৎসর সম্পূর্ণ হওয়ার পর তাঁরা আত্মপ্রকাশ করলে বিরাট স্বীয় কন্যা
উত্তরার সঙ্গে অর্জুনের বিবাহের প্রস্তাব দেন। তখন অর্জুন জানান উত্তরা
তাঁকে আচার্যের ন্যায় শ্রদ্ধা করেন। তাই তিনি উত্তরাকে পুত্রবধূ রূপে
গ্রহণ করবেন। তাঁর পুত্র অভিমন্যুই মৎস্যরাজের জামাতা হওয়ার
উপযুক্ত।মহারাজ বিরাট তাতে সম্মত হন। এরপর উপপ্লব্য নগরীতে অভিমন্যু ও
উত্তরার বিবাহ সম্পন্ন হয়।আর সেই অভিমুন্য ও উত্তরার পুত্র হলেন
পরীক্ষীত।যিনি কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সময় উত্তরার গর্ভে ছিলেন।
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুন কতৃক ভীষ্মের শরশয্যার পর কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের কৌরব সেনাপতি হন দ্রোণাচার্য।দ্রোণের
অধিনে যুদ্ধ চলাকলে যুদ্ধের ত্রয়োদশ দিনে কৌরব সেনাপতি দ্রোণাচার্য একটি
চক্রব্যূহ রচনা করেন এবং পান্ডবদের তা ভেদ করতে আমন্ত্রণ জানান। এইসময়ে
চক্রব্যূহ ভেদ করার জন্য পান্ডব শিবিরে অভিমন্যু ব্যতীত আর কেউ উপস্থিত না
থাকায় যুধিষ্ঠির তাঁর ওপর এই গুরুভার অর্পণ করেন। এরপর অভিমন্যু যুদ্ধে
অবতীর্ণ হন এবং চক্রব্যূহ ভেদ করে কৌরব সেনা মধ্যে একাই উপস্থিত হন বীর
বালক অভিমুন্য। তাঁর শরবর্ষণে মদ্ররাজ শল্য ও দুঃশাসন মূর্ছিত হন। কর্ণের
এক ভাই ও শল্যের ভ্রাতা নিহত হয় এবং শল্য রণভূমি থেকে পলায়ণ করেন।ভয়াবহ
যুদ্ধ চলতে থাকে তখন।কৌরব সেনা দ্বারা বেষ্টিত হয়ে একাই সবার সাথে পরম
বিক্রমে যুদ্ধ করেন বীর অভিমুন্য।এইসময়
যুধিষ্ঠির, ভীম, ধৃষ্টদ্যুম্ন, শিখন্ডী, সাত্যকী, বিরাট ও দ্রুপদ ব্যূহে
প্রবেশ করার চেষ্টা করলে ধৃতরাষ্ট্রের ভগ্নিপতি সিন্ধুরাজ জয়দ্রথ শিবের
বরে তাদের পরাস্ত করেন ও ব্যূহের প্রবেশ পথ রুদ্ধ করে্ন। কুরুসৈন্য বেষ্টিত
অভিমন্যু একাকী যুদ্ধ করতে থাকেন। কৌরবসৈন্য ছত্রভঙ্গ হয় এবং যোদ্ধারা
পালাতে থাকে। শল্যপুত্র রুক্মরথ, দুর্যোধনের পুত্র লক্ষণ ও কোশলরাজ বৃহদবল
তাঁর বাণে হত হন।
অভিমন্যুকে অপ্রতিরোধ্য দেখে কর্ণ দ্রোণের উপদেশে
তাঁকে পিছন থেকে আক্রমণ করে তাঁকে রথচ্যূত ও ধনুর্হীন করেন এবং দ্রোণ, কৃপ,
কর্ণ, অশ্বত্থামা, দুর্যোধন ও শকুনি নিষ্করুণ ভাবে তাঁর ওপর শরাঘাত করতে
থাকেন।সপ্ত মহারথীর সাথে রথহীন অভিমন্যু খড়গ, চক্র, গদা এমনকি রথের চাকা
দিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এইসময় দুঃশাসনের পুত্র তাঁর
মাথায় গদাঘাত করে। ফলে কৌরবসেনা নিপীড়িত বালক অভিমন্যুর প্রাণশূন্য দেহ
ভূপাতিত হয়। মাত্র ষোলো বছর বয়সে এক ষড়যন্ত্রের আর অনৈতিক যুদ্ধে তিনি
মৃত্যুবরণ করেন।
অভিমুন্যের একমাত্র পুত্র পরীক্ষিৎ তাঁর মৃত্যুর পর জন্মগ্রহণ করেন।যিনি যুধিষ্টিরের পর হস্তিনাপুরের রাজা হন।
তথ্য সহায়তা https://mobile.facebook.com/
সমুদ্র পথে ভারত স্ক্যান করে পাঠিয়েছেন
যথা সময় পোস্ট করা হবে ............
Jader history o mythology te interest nei tarao ACK te interested hobe.
ReplyDeleteThanks Indrada.
Welcome
Delete2nd paragraph 2nd line a "মাতা উত্তরার গর্ভে থাকতেই তাঁর শিক্ষা শুরু হয়েছিল।". Error ta thik kore din. মাতা সুভদ্রা।
ReplyDeleteহ্যা ঐ এক জয়গায় মিস্টেক ছিলো। ঠিক করে দিলাম।
DeleteThanxs indra da.
ReplyDeletewelcome.
Delete