যুধিষ্ঠির যুদ্ধ এড়াবার জন্য তাঁর পাঁচ ভাইয়ের জন্য পাঁচটি গ্রাম প্রার্থনা করলে দুর্যোধন তাও প্রত্যাখ্যান করেন। ফলে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে দেখা দেয়। যুদ্ধের পূর্বে দুর্যোধন উলুকের দ্বারা পাণ্ডবদের প্রতি কটুবাক্য বর্ষণ করান। অন্যায় যুদ্ধে অর্জুনপুত্র অভিমন্যুকে হত্যা করার সময় সপ্তরথীদের মধ্যে দুর্যোধন ছিল। কর্ণবধের পর কৃপাচার্য সন্ধির পরামর্শ দিলে দুর্যোধন তা প্রত্যাখ্যান করেন। যুদ্ধের ১৮ দিনে দুর্যোধনের সকল সৈন্য নিহত হলে- ইনি পালিয়ে দ্বৈপায়ন হ্রদে যান। মায়া দ্বারা জলের স্তম্ভ তৈরি করে সেখানে লুকিয়ে থাকেন। এই সময় দুর্যোধনের পক্ষের তিন সেনাপ্রধান অশ্বত্থামা, কৃপাচার্য ও কৃতবর্মা যুদ্ধের পরামর্শ করতে এলে- তিনি পরদিনের জন্য এই আলোচনা স্থগিত রাখতে বলেন। এই আলোচনা কয়েকজন শিকারী শুনে পাণ্ডবদের কাছে এসে দুর্যোধনের অবস্থানের কথা জানান। পাণ্ডবরা সেখানে এলে, ভীমের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। উল্লেখ্য ইনি ভীমকে হত্যা করার জন্য তের বত্সর এক লৌহ মূর্তির উপর গদা প্রহারের অভ্যাস করেছিলেন। সরস্বতী নদীর দক্ষিণ প্রান্তে উভয়ের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। গদা যুদ্ধে ভীম অত্যন্ত বলশালী হলেও দুর্যোধন অত্যন্ত কৌশলী ছিলেন। কৃষ্ণের ইক্তি ভীম অন্যায়ভাবে দুর্যোধনের উরুতে আঘাত করে তা ভেঙে দেন। উল্লেখ্য গদা যুদ্ধে কটি দেশের নিম্নে আঘাত করা অন্যায় বলে বিবেচিত হত। উরু ভঙ্গের পর ভীম তাঁর বাম পা দিয়ে দুর্যোধনের মাথা নিষ্পেষণ করেন। এই অন্যায় যুদ্ধ দেখে উপস্থিত বলরাম ভীমকে হত্যা করতে অগ্রসর হলে কৃষ্ণ তাঁকে নিবারণ করেন। দুর্যোধন এই অন্যায় যুদ্ধের জন্য কৃষ্ণকে তিরস্কার করেন।
পাণ্ডবেরা মৃতপ্রায় দুর্যোধনকে পরিত্যাগ করে চলে গেলে, সেখানে কৃপাচার্য, কৃতবর্মা ও অশ্বত্থামা আসেন। এরপর দুর্যোধন অশ্বত্থামাকে সেনাপতি হিসাবে নিয়োগ করেন এবং ভীমের ছিন্নমুণ্ডু আনার নির্দেশ দেন। এই তিনজনই রাত্রিকালে পাণ্ডব শিবিরে প্রবেশ করে ঘুমন্ত সকলকেই হত্যা করেন। এই সময় পঞ্চপাণ্ডব কৃষ্ণ ও সাত্যকি অনত্র্য থাকায় তাঁরা রক্ষা পান। অশ্বত্থামা দুর্যোধনকে এই সংবাদ প্রেরণ করলে আনন্দ চিত্তে প্রাণত্যাগ করেন। অস্ত্রাঘাতে মৃত্যুর জন্য ইনি স্বর্গলাভ করেন।
No comments:
Post a Comment