পান্ডবদের অজ্ঞাতবাসের কথা সকলের জানা। সেই সময় অস্ত্রশস্ত্র কোথায় লুকিয়েছিল? তাও অনেকেরই জানা। পান্ডবরা ঠিক করে সেগুলি লুকিয়ে রাখবে একটি গাছের কোটরে। যে গাছের কোটরে সেগুলি লুকিয়ে রেখেছিল, সেই গাছের নাম হচ্ছে শমী বৃক্ষ।
মহাভারতে উল্লেখিত সেই শমী বৃক্ষ কিন্তু দেখতে পাবেন এ রাজ্যেই। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গে। রাজ্যের দক্ষিন দিনাজপুর জেলার হরিরামপুরের হাতিডুবা গ্রামে। আর এই গাছ দেখতেই শুধু রাজ্যের বিভিন্ন জেলার মানুষ নন, দেশ-বিদেশের মানুষও ভিড় জমান এই হাতিডোবা গ্রামে। আনাচে কানাচে।
এলাকার মানুষের বিশ্বাস, ওই গাছের কোটরেই পান্ডবরা লুকিয়ে রেখেছিল তাদের অস্ত্রশস্ত্র। আর তাহলে সেই গাছটির বয়স কত হবে? এই প্রাচীর গাছটির বয়স আন্দাজ করা খুবই কঠিন। স্থানীয় ষাটোর্ধ ব্যক্তিরাও বলছেন, তাঁরা ছোট থেকেই একইভাবে দেখে আসছেন গাছটি। আবার বাবা-দাদুর কাছেও একই গল্প শুনেছিলেন। তাঁরাও নাকি ওই গাছটি একইভাবে দেখে এসেছেন। মহাভারতের পান্ডবদের সঙ্গে এই সম্পর্কের ইতিহাসও শুনে এসেছেন। এখন সেই লোককথা ছড়িয়ে রয়েছে গ্রামের আনাচে কানাচে।
এবার আসা যাক শমীবৃক্ষের কথায়। যার বৈজ্ঞানিক নাম Prosopis cineraria। Fabacea পরিবারের অন্তর্গত উদ্ভিদের পাতা খানিক লজ্জাবতী গাছের পাতার ন্যায়। এই গাছটি অবশ্য বড় হয় না। সাধারণত, তিন থেকে পাঁচ মিটার অর্থাৎ প্রায় দশ ফুট থেকে সাড়ে ১৬ ফুটের মতো উচ্চতা। এই গাছটি শুধু ভারতে রয়েছে এমন নয়, আফগানিস্তান, বাহারিন, ইরান, ওমান, পাকিস্তান, সৌদি আরব, ইউনাইটেড এমিরেটাস থেকে ইয়েমেন – সর্বত্রই দেখা যায়। আবার ভারতের বিভিন্ন রাজ্যেও দেখা যায়। তবে বিভিন্ন রাজে এই গাছের নাম বিভিন্ন। যেমন পশ্চিমবঙ্গে একে শমী বৃক্ষ বলে। মহারাষ্ট্র এবং উত্তরপ্রদেশেও শমী বলা হয়। তবে তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশে বলা হয় জাম্মি (jammi), গুজরাটে খিজরো (khijro), রাজস্থানে খেজরি (khejri), হরিয়ানায় জান্টি (janti) ও পাঞ্জাবে জান্ড (jand)। এই গাছের ওষধি গুণও রয়েছে।
No comments:
Post a Comment