ঘটোৎকচ মহাভারতের একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। ঘটোৎকচ খুবই শক্তিশালী ও মায়াবী রাক্ষস ছিল। তার পিতা ছিল পঞ্চপান্ডবের দ্বিতীয় পান্ডব ভীম ও মাতা ছিল অপরূপ সুন্দরী রাক্ষস রাজকন্যা হিড়িম্বা।
ঘটোৎকচের স্ত্রীর নাম ছিল অহিল্বতি ও পুত্রের নাম ছিল বর্বরিক।
ঘটোৎকচের হাতিয়ার ছিল গদা। সে জাদুবিদ্যায় পারদর্শী ছিল। নিজের শরীরকে ইচ্ছামত বৃহদাকার বা ক্ষুদ্রাকার করতে পারত ঘটোৎকোচ।
এই ঘটোৎকচ কুরুক্ষেত্রে পান্ডবের সাথে কৌরবদের যুদ্ধ বাঁধলে পান্ডবদের পক্ষে যুদ্ধ করেছিল।
যুদ্ধের চতুর্দশ দিনে কুরু-পান্ডবদের যুদ্ধ আরো ভয়ংকর হয়ে ওঠে। সেদিন রাতের বেলাও যুদ্ধ চলতে থাকে। কৌরব বাহিনীর কর্ণ সেদিন ভীষণ তেজে যুদ্ধ করতে থাকে।
যেহেতু রাক্ষসরা নিশাচর সেহেতু ভগবান শ্রী কৃষ্ণ ঘটোৎকচকে ডেকে বললেন যে, “মহাবীর কর্ণ যে বিষম তেজে আজ যুদ্ধ করছে তাতে করে কোন পান্ডবসৈন্য তার মুখোমুখি দাঁড়াতে পারছে না। আজ কেবল দুজন ব্যক্তিই আছে যারা কর্ণের মোকাবিলা করতে সক্ষম। একজন তুমি আরেকজন অর্জুন। কিন্তু অর্জুনকে এখন যুদ্ধে পাঠানো ঠিক হবে না। কারণ, অর্জুনকে বধ করবার নিমিত্তে কর্ণ ইন্দ্রের উপাসনা করে ইন্দ্রদত্ত ‘বৈজয়ন্তী’ শক্তি লাভ করেছে। এই শক্তি মাত্র একবারই নিক্ষেপ করা যাবে। ফলে তুমিই যেয়ে কর্ণের মুখোমুখি হও।’’
ঘটোৎকচ ভগবান বাসুদেব শ্রী কৃষ্ণের অনুমতি পেয়ে একশত ঘোড়াটানা রথে করে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করে। তার বৃহৎ রথ ভালুকের চামড়া দ্বারা আচ্ছাদিত। রথের আকাশস্পর্শী ধ্বজের উপর একটি ভীষণ করালদর্শন গৃধ্র (শকুন) উপবিষ্ঠ রয়েছে।
ঘটোৎকচ মায়া(জাদু) দ্বারা ভীষণ আকৃতির সব রাক্ষস সৃষ্টি করল। তারা কৌরব বাহিনীকে ছিন্ন ভিন্ন করে দিতে লাগল। কর্ণ একের পর এক ভয়ংকর বাণ নিক্ষেপ করতে লাগল ঘটোৎকচের দিকে। ঘটোৎকচ কখনো অদৃশ্য হয়ে আবার কখনো দৃশ্যমান হয়ে প্রতিঘাত করতে লাগল। ঘটোৎকচের বিক্রমে কৌরবেরা দিশেহারা বোধ করতে লাগল।
যুদ্ধের এক পর্যায়ে ঘটোৎকচ একটি চক্রযুক্ত শতঘ্নী নিক্ষেপ করে কর্ণের রথের চার অশ্ব বধ করে। কৌরবগণ তখন ঘটোৎকচের বিক্রমের সাথে টিকতে না পেরে কর্ণকে অনুরোধ করে ইন্দ্রদত্ত শক্তি অস্ত্রে ঘটোৎকচকে বধ করতে। প্রথমত কর্ণ ইতস্তত করতে থাকে কারণ সে ঐ অস্ত্র দিয়ে অর্জুনকে বধ করবে বলে ঠিক করে রেখেছিল। কিন্তু ঘটোৎকচের ভয়াবহ বিক্রম দেখে অনন্যোপায় হয়ে কর্ণ ইন্দ্রদত্ত ‘বৈজয়ন্তী’ শক্তি ঘটোৎকচের প্রতি নিক্ষেপ করে।
ভয়ংকর কালরুদ্র সদৃশ এই শক্তি যখন ঘটোৎকচের দিকে ধেয়ে যায় ঘটোৎকচ বুঝতে পারে তার অন্তিম সময় ঘনিয়ে এসেছে। তখন সে একটি অদ্ভুত কাজ করে। সে তার নিজের শরীরকে বিন্ধ্য পর্বত সদৃশ বিশাল করে তোলে।
কর্ণের নিক্ষিপ্ত শক্তি ঘটোৎকচের সকল মায়া ছিন্ন করে ও তার বক্ষ বিদীর্ণ করে ইন্দ্রলোকে চলে যায়।
ঘটোৎকচ পর্বতের মত বিশাল শরীর নিয়ে কৌরবসৈন্যদের মধ্যে পতিত হয়; তার প্রাণহীন দেহের ভারে কৌরব বাহিনীর এক অংশ নিষ্পেষিত ও ধ্বংস হয়ে যায়।
এভাবে ঘটোৎকচ তার মৃত শরীর দ্বারাও শত্রুপক্ষের ভয়াবহ বিনাশ করে যায়।
ভীষ্ম পর্ব
যুদ্ধের তৃতীয় দিনে ঘটোৎকচ কৌরব যুবরাজ দুর্যোধনকে পরাজিত করেন। চতুর্থ দিনে ঘটোৎকচের সঙ্গে প্রাগজ্যোতিষ (বর্তমান আসাম) রাজ্যের রাজা ভগদত্তের তীব্র যুদ্ধ হয়, কিন্তু সূর্যাস্ত হয়ে যাওয়ায় জয়-পরাজয় ব্যতিরেকেই যুদ্ধ সমাপ্ত হয়। পরবর্তীতে সপ্তম দিনে ভগদত্ত ঘটোৎকচকে দ্বৈরথ যুদ্ধে পরাজিত করেন। অষ্টম দিনে ঘটোৎকচ দ্রোণাচার্য, অশ্বত্থামা, দুর্যোধন, জয়দ্রথসহ বহু কৌরব মহারথীকে পরাজিত করেন।
দ্রোণ পর্ব
যুদ্ধের চতুর্দশ দিনে সূর্যাস্তের পরও যুদ্ধ চলছিল। রাত্রিতে রাক্ষসদের শক্তি বেড়ে যায় বলে এসময় ঘটোৎকচ অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে ওঠেন। কৌরবপক্ষ অবলম্বনকারী দুই রাক্ষস অলম্বুশ ও অলায়ুধ ঘটোৎকচের হাতে নিহত হন। এরপর ঘটোৎকচ কৃষ্ণের নির্দেশে কর্ণকে আক্রমণ করেন। ঘোরতর যুদ্ধের পর কর্ণ দেবরাজ ইন্দ্রের একাঘ্নী অস্ত্র ঘটোৎকচের দিকে নিক্ষেপ করলে এর আঘাতে ঘটোৎকচ নিহত হন। কিন্তু মৃত্যুর পূর্বে ঘটোৎকচ বিশালাকার ধারণ করায় তাঁর শব কৌরব সৈন্যবাহিনীর ওপরে পতিত হয় এবং এক অক্ষৌহিণী সৈন্য নিহত হয়।তথ্য সূত্র https://bn.wikipedia.org/
ইন্দ্রবাবু, ই-মেল চেক করুন ।
ReplyDeleteকরছি ...
Deleteপেয়ে গেছি। অনেক ধন্যবাদ। আপনার নামে পোস্ট করে দেবো।
Deleteস্বাগতম । পোস্টে আমার নাম না দিলেও কোন আপত্তি নেই । আপনার প্রজেক্টটা যথাসম্ভব পূর্ণাঙ্গ হোক, সেজন্যই একটু খেটে দিলাম আর কি...
Deleteঅনেক ধন্যবাদ ।
DeleteDarun Indrada. 1000 no. Post e ACK e chai; je gulo ekhono baki ache.
ReplyDeleteকোন স্পেশাল ইসু পোস্ট করবো ।
Deleteইন্দ্রজাল কমিকস, অমর চিত্রকথা এরপর ডায়মন্ড কমিকস পাবো কি?
ReplyDeleteআপনার কাছে ডায়মন্ড কমিকসের ধারাবাহিক তালিকা আছে?
আছে।
DeleteDada if possible je gulor bangla nei,eng comics gulo din
ReplyDeleteঅন্য ভাষার কমিকস্ গুলি আমার কাছে নেই ।
DeleteThanxs Indra da.
ReplyDeletewelcome.
Deleteindranath dada apnar indrajal gulo ki watermark chara pawoa jabe? jodi ektu upokar korten dada..
ReplyDelete