৭৬ নং সুন্দরী, বাংলায় প্রকাশিত হয়েছিল কি না সন্ধেহ আছে...বাংলায় প্রচুর বই ই প্রকাশিত নয় ।
নেতাজির মৃত্যু রহস্যই থেকে গেছে... তবে bbc র বাংলা সাইট থেকে ওঁদের বক্তব্য তুলে ধরলাম । ...
তবে এই প্রতিবেদন সম্পর্কে যথেষ্ট সন্দেহ আছে । ...এটাও জানা যায় যে নেতাজি সোভিয়েত দেশ এ গৃহ বন্দী অবস্থায় মারা গেছেন।
https://www.bbc.com/bengali/news-46973443
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে এক কিংবদন্তি নেতা সুভাষচন্দ্র বসু। সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে ভারতকে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে সেটা এখনও পরিস্কার নয়। ২৩শে জানুয়ারি তার জন্মবার্ষিকীতে বিবিসির হিন্দি বিভাগ জানতে চেষ্টা করেছে কী হয়েছিল মি. বসুর জীবনের শেষ মুহূর্তগুলোতে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর পূর্ব রণাঙ্গনে জাপানি সেনাবাহিনীর মনোবল একেবারে তলানিতে ঠেকেছিল। সেই সময়েই সুভাষচন্দ্র বসু সিঙ্গাপুর থেকে ব্যাংকক হয়ে সাইগনে পৌঁছেছিলেন।
কিন্তু সেখান থেকে এগোনোর জন্য একটাও জাপানি বিমান ছিল না। অনেক চেষ্টার পরে একটা জাপানি বোমারু বিমানে জায়গা পেয়েছিলেন তিনি।
বিমানঘাঁটিতে তাকে বিদায় জানাতে এসেছিলেন আজাদ হিন্দ ফৌজের যেসব সহকর্মী, তাদের সঙ্গে করমর্দন করে 'জয় হিন্দ' বলে অভিবাদন জানিয়ে কিছুটা লাফিয়েই বিমানের সিঁড়িগুলো বেয়ে উপরে উঠে গিয়েছিলেন তিনি।
তিনি বিমানে ওঠার পরেই অন্যদের 'জয়-হিন্দ' অভিবাদন জানিয়ে তার এডিসি কর্নেল হাবিবুর রহমানও বিমানে উঠে গিয়েছিলেন।
মি. বসুর ওপরে 'লেইড টু রেস্ট' নামের বইটির লেখক, সিনিয়র সাংবাদিক আশিস রায় বলছিলেন, "ওই বিমানটিতে ক্রুসহ ১৪ জন ছিলেন। পাইলটের ঠিক পিছনেই নেতাজী বসেছিলেন। তার সামনে পেট্রোলের বড় বড় জেরিক্যান রাখা ছিল। নেতাজীর পিছনেই ছিলেন কর্নেল হাবিবুর।"
"বিমানে চড়ার সঙ্গে সঙ্গেই জাপানিরা নেতাজীকে সহ-পাইলটের আসনে বসার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু সেই অনুরোধ তিনি বিনম্রভাবে ফিরিয়ে দেন। ঘটনা হল, সহ-পাইলটের আসনটি তার মতো লম্বা মানুষের জন্যে বেশ ছোট ছিল," বলছিলেন মি. রায়।
তার কথায়, "পাইলট আর লেফটেন্যান্ট জেনারেল শীদে ছাড়া বাকি সকলেই বিমানের মেঝেতেই বসেছিলেন। নেতাজীকে একটা ছোট কুশন দেওয়া হয়েছিল। কারও কাছেই সীট বেল্ট ছিল না।"
ওই বোমারু বিমানের ভেতরে ভীষণ ঠাণ্ডা লাগছিল সবার। তখনকার দিনে যুদ্ধবিমানে এয়ার কন্ডিশনার লাগানো থাকত না। প্রত্যেক হাজার মিটার ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই বিমানের তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি করে কমে যেত।
ঠাণ্ডা আটকাতে সুভাষচন্দ্র বসু তার এডিসি কর্নেল হাবিবুর রহমানের কাছ থেকে তার জ্যাকেটটা চেয়ে নিয়েছিলেন। দুপুর দুটো ৩৫ মিনিটে বোমারু বিমানটি জমি ছেড়ে আকাশে উড়েছিল।
তার কথায়, "আমি যখন রক্ত দেওয়ার জন্য তার শিরায় সুচ ফোটালাম, কিছুটা রক্ত সুচ দিয়ে বেরিয়ে এসেছিল। রক্তের রঙটা ছিল গাঢ়। মৃত্যুর কিছুটা আগে থেকেই রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যেতে থাকে আর রক্তের রঙ পাল্টাতে থাকে।"
"একটা বিষয় আমাকে বেশ অবাক করেছিল। পাশের ঘরে দুর্ঘটনায় আহত জাপানি সৈনিকরা ব্যথায় চিৎকার করছিল, কিন্তু সুভাষচন্দ্র বসুর মুখ থেকে একটা শব্দও বের হয়নি। অথচ আমি ডাক্তার হিসাবে বুঝতে পারছিলাম তার কতটা শারীরিক কষ্ট হচ্ছে," জানিয়েছিলেন ডাক্তার ইশি।
১৮ অগাস্ট, ১৯৪৫, রাত প্রায় ন'টার সময়ে সুভাষ চন্দ্র বসু শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
আশিস রায়ের কথায়, "জাপানে মৃতদের ছবি তোলার প্রথা নেই। কিন্তু কর্নেল রহমান বলেছিলেন যে তিনি জেনে-শুনেই সুভাষচন্দ্রের ছবি তুলতে দেন নি। কারণ তার শরীর তখন বেশ ফুলে গিয়েছিল।"
"জাপানি সেনাবাহিনীর মেজর নাগাতোমোর কথা অনুযায়ী, তার গোটা শরীরেই ব্যান্ডেজ বাঁধা ছিল। ওর পার্থিব শরীরটা ঘরের এক কোনে রেখে দেওয়া হয়েছিল। চারদিকে একটা পর্দা দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সামনে কয়েকটা মোমবাতি জ্বলছিল। ফুলও ছিল কিছু," বলছিলেন মি. রায়।
"কয়েকজন জাপানি সৈনিক সেখানে হাজির ছিলেন। সম্ভবত সেইদিনই, অথবা পরের দিন, ১৯ অগাস্ট নেতাজীর শরীর একটা কফিনে রাখা হয়। মেজর নাগাতোমো কফিনের ঢাকনা খুলে নেতাজীর চেহারা একবার দেখেছিলেন।"
কোনও বিমান না পাওয়ার ফলে তার মৃতদেহ সিঙ্গাপুর বা টোকিওতে নিয়ে যাওয়া যায় নি। চারদিন পরে, ২২ অগাস্ট তাইপেতেই তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। সেখানে হাজির ছিলেন কর্নেল হাবিবুর রহমান, মেজর নাগাতোমো আর সুভাষ চন্দ্রের দোভাষী জুইচি নাকামুরা।
মেজর নাগাতোমো শাহনাওয়াজ কমিশনে বলেছিলেন, আমি ফার্নেসের ঢাকনাটা খুলে ভেতর থেকে 'স্লাইডিং প্লেট'টা টেনে এনেছিলাম। ভেতরে নেতাজীর কঙ্কালটা পড়ে ছিল। শরীরটা দাহ করা হয়ে গিয়েছিল। একটা ছোট কাঠের কৌটা ছিল আমার সঙ্গে। বৌদ্ধ পরম্পরা অনুযায়ী দুটো চপস্টিক দিয়ে নেতাজীর ঘাড়ের কাছ থেকে একটা হাড় তুলে এনেছিলাম। তারপর একে একে তার শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গ থেকে একেকটা হাড় সংগ্রহ করে ওই কাঠের কৌটোর ভেতরে রেখেছিলাম।"
কর্নেল হাবিবুর রহমানও পরে জানিয়েছিলেন যে শ্মশানে এক কর্মকর্তা তাকে সুভাষ বসুর সোনায় বাঁধানো একটা দাঁত দিয়েছিলেন। ওই দাঁতটা মৃতদেহর সঙ্গে জ্বলে যায় নি।
আশিস রায়ের কথায়, "আমি যখন ১৯৯০ সালে পাকিস্তানে গিয়েছিলাম, তখন হাবিবুর রহমানের ছেলে নইমুর রহমানের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। তিনি আমাকে জানিয়েছিলেন যে তার বাবা কাগজে মোড়া সুভাষ বসুর ওই সোনা বাঁধানো দাঁতটা অস্থি- কলসেই রেখে দিয়েছিলেন।"
২০০২ সালে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের দুই অফিসার যখন রেনকোজি মন্দিরে রাখা সুভাষ বসুর অস্থি-কলস পরীক্ষা করতে গিয়েছিলেন, তারাও ভেতরে ওই কাগজের মোড়কে রাখা সোনার দাঁতটা দেখতে পেয়েছিলেন।
সেই সময়ে জাপানে ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন আফতার শেঠ। তিনি বলছেন, "ওই দুজন অফিসার, সি রাজশেখর এবং আর্মস্ট্রং চেঙসন আমার সঙ্গেই টোকিওতে ভারতীয় দূতাবাসে কাজ করতেন। বাজপেয়ী সরকার যখন নেতাজীর মৃত্যুর তদন্ত করতে মুখার্জী কমিশন তৈরি করেন, তখন বিচারপতি মুখার্জীও টোকিওতে এসেছিলেন।"
আশিস রায় জানাচ্ছেন, "কিন্তু বিচারপতি মুখার্জী নিজে রেনকোজি মন্দিরে যান নি। তার নির্দেশ মতো দু'জন অফিসারকে পাঠানো হয়। তারা কাগজের মোড়কে রাখা ওই দাঁতের ছবিও তুলে এনেছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও মুখার্জী কমিশন এই সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে নেতাজীর মৃত্যু ওই বিমান দুর্ঘটনায় হয় নি আর রেনকোজি মন্দিরে যে অস্থি রাখা আছে, সেটাও নেতাজীর নয়।"
"এটা অন্য বিষয় যে মনমোহন সিং সরকার মুখার্জী কমিশনের রিপোর্ট খারিজ করে দিয়েছে," বলছিলেন আশিস রায়।
সুভাষচন্দ্রের কন্যা অনিতা পাফেরও ইচ্ছা যে তার পিতার অস্থি ভারতে ফিরিয়ে আনা হোক।
মি. রায়ের কথায়, "অনিতাই আমার বইয়ের মুখবন্ধ লিখে দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন যে নেতাজী একটা স্বাধীন ভারতে ফিরে এসে কাজ করতে চেয়েছিলেন। সেটা যখন সম্ভব হয় নি, তখন অন্তত তার অস্থিটা ভারতের মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হোক। তার মৃত্যুর ৭৩ বছর পরে হলেও অস্থিটা যদি ভারতে নিয়ে এসে গঙ্গায় বিসর্জন দেওয়া হয়, সেটাই বোধ হয় রাষ্ট্রের তরফে তার প্রতি সবচেয়ে বড় সম্মান জানানো হবে।"
নেতাজি অমর রহে, জয় হিন্দ
ReplyDeleteসুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন ইন্দ্রবাবু
জয় হিন্দ
DeleteThanxs Indra da.
ReplyDeletewelcome.
Delete