Wednesday, July 19, 2023

Post # 1136 Bengali Amarchitra Katha 349

                                        ডাউনলোড করুন

 হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে দ্রুপদ  রাজের কন্যা ও পঞ্চপাণ্ডবের স্ত্রী।
 দ্রোণাচার্য
কে হত্যা করারা জন্য,
দ্রুপদ  গঙ্গা ও যমুনার তীরে যাজ ও উপযাজ নামক দুই ব্রাহ্মণের সাহায্যে পুত্রেষ্টি যজ্ঞ করেন। এই যজ্ঞের আগুন থেকে ধৃষ্টদ্যুম্ন নামে এক পুত্র ও যজ্ঞবেদী থেকে কৃষ্ণবর্ণা এক কন্যার উদ্ভব হয়। এই কন্যাই দ্রৌপদী। যজ্ঞ থেকে জন্মেছিলেন বলে, এঁর অপর নাম যাজ্ঞসেনী। জন্মের সময় আকাশবাণী হয়- এই পুত্র দ্রোণকে হত্যা করবে এবং এই কন্যা ক্ষত্রিয়দের কুলক্ষয়, দেবতাদের মহত্কর্মসাধন ও কৌরবকুল বিনষ্ট হবে।
পাঞ্চাল দেশের রাজকন্যা বলে ইনি পাঞ্চালী নামে পরিচিত হন। এঁর গায়ের রঙ কালো ছিল বলে তিনি কৃষ্ণা নামে অভিহিত হতেন। অন্যমতে তিনি কৃষ্ণের ভক্তপরায়ণা অথচ বন্ধুর মত ছিলেন বলে কৃষ্ণা নামে অভিহিত হন। তিনি ছিলেন জন্ম থেকেই যুবতী। এঁর ছিল পদ্মফুলের মতো বিকশিত চোখ। চোখের রঙ ছিল নীল। কুঞ্চিত কেশরাশি তাঁকে অনন্যা সৌন্দর্যের অধিকারী করেছিল।

দ্রুপদরাজের কন্যা বলে ইনি দ্রৌপদী নামে পরিচিতি লাভ করেন। অর্জুনের সুখ্যাতি শুনে দ্রৌপদী এঁকে স্বামী হিসাবে কামনা করেন। অন্যদিকে দ্রুপদরাজও কন্যাকে অর্জুনের হাতে সমর্পণের ইচ্ছা পোষণ করতে থাকেন। জতুগৃহ থেকে পরিত্রাণ লাভের পর পাণ্ডবরা কিছুদিন লোকচক্ষুর অন্তরালেই থাকেন। অর্জুনের কোন সংবাদ না পেয়েও দ্রুপদ দ্রৌপদীর স্বয়ংবরসভা আহ্বান করেন। কিন্তু এর জন্য ইনি এমন একটি পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন যাতে উত্তীর্ণ হওয়ার যোগ্যতা একমাত্র অর্জুনেরই ছিল। পরীক্ষাটি ছিল- একটি জলাশয়ের পারে অবস্থিত একটি ঘূর্ণায়মান চক্র থাকবে। উক্ত চক্রের মধ্যে থাকবে একটি মাছ। জলের মধ্যে পতিত ছায়া দেখে ওই চক্রমধ্য-মাছের চোখে বাণ বিদ্ধ করতে হবে।

স্বয়ংবর-সভায় ব্রাহ্মণের বেশে পঞ্চপাণ্ডব উপস্থিত হন। কর্ণ লক্ষ্যভেদের জন্য অগ্রসর হলে- দ্রৌপদী ঘোষণা করেন যে, হীনজাতীয় সূতপুত্রকে তিনি বিবাহ করবেন না। এই কারণে কর্ণ ক্রোধে ধনু ফেলে দিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন। এরপর অন্যান্য ক্ষত্রিয়েরা লক্ষ্যভেদে অকৃতকার্য হলে, অর্জুন লক্ষ্যভেদ করে দ্রৌপদীকে লাভ করেন। কিন্তু অন্যান্য ক্ষত্রিয়রা পাণ্ডবদের আক্রমণ করলে- পাণ্ডবরা সমবেতভাবে তাদের পরাজিত করে দ্রৌপদীকে লাভ করেন। এরপর দ্রৌপদীকে নিয়ে পঞ্চপাণ্ডব যখন ঘরে ফেরেন, তখন তাঁদের মা কুন্তী ঘরের মধ্যে ছিলেন। পঞ্চপাণ্ডব তাঁদের মাকে উদ্দেশ্য করে বলেন যে, তাঁরা একটি অপূর্ব সামগ্রী ভিক্ষা করে এনেছেন। কুন্তী না দেখেই বলেন,- তোমরা সকলে মিলে সেই জিনিস ভোগ কর। এরপর দ্রৌপদীকে দেখে ইনি বিব্রত হয়ে পড়েন। পরে মাতৃ আজ্ঞায় এঁরা পাঁচজনই দ্রৌপদীকে বিবাহ করতে বাধ্য হন।

দ্রৌপদীর পাঁচজন স্বামী হওয়ার বিষয়টি ধর্মনাশের কারণ হবে কিনা, সে বিষয়ে পাণ্ডবরা যখন চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন, তখন ব্যাসদেব সেখানে আসেন। ব্যাসদেব এই বিবাহ অনুমোদন করতে গিয়ে- দ্রৌপদীর পূর্বজন্মের বিষয়টি প্রকাশ করেন। তাঁর মতে- পূর্বকালে এক ঋষিকন্যা নিজ কর্মদোষে স্বামীলাভে বঞ্চিত হন। তাই স্বামী লাভের জন্য ইনি মহাদেবের তপস্যা করতে থাকেন। তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে- মহাদেব তাঁকে বর প্রার্থনা করতে বললে, ইনি পাঁচ বার স্বামী লাভের প্রার্থনা করেন। মহাদেব আশীর্বাদ করে বলেন যে- পাঁচবার স্বামী প্রার্থনা করেছে বলে, পরজন্মে তার পাঁচজন স্বামী হবে। গল্পের শেষে ব্যাসদেব বলেন যে,- মহাদেবের বর প্রাপ্ত সেই কন্যাই হলো দ্রৌপদী। তাই মহাদেবের আশীর্বাদের কারণে পঞ্চপাণ্ডবকে স্বামী হিসাবে পেলে দ্রৌপদীর কোন পাপ হবে না বা কোন অধর্ম হবে না। পরে এর বিধিমতো- দ্রুপদ পঞ্চপাণ্ডবের সাথে দ্রৌপদীর বিবাহ অনুমোদন করেন। এর কিছুদিন পর পঞ্চপাণ্ডবের কাছে নারদ উপস্থিত হলে, পঞ্চপাণ্ডবের সাথে দ্রৌপদী কিভাবে স্ত্রী হিসাবে থাকবেন, সে বিষয়ে নারদকে জিজ্ঞাসা করলে, নারদ একটি পরামর্শসূচক গল্প বলেন। পরে পঞ্চপাণ্ডব নিজেরাই যে বিধানটি তৈরি করেন, তা হলো-

১। দ্রৌপদী যখন একজন স্বামীর কাছে থাকবেন, তখন অন্য কোন পাণ্ডব সেখানে যেতে পারবেন না।
২। একজন স্বামীর সাথে থাকা অবস্থায় অন্য পাণ্ডবদের যিনি দেখবেন, তাঁকে ১২ বৎসর ব্রহ্মচারী হয়ে কাটাতে হবে।

এই বিধান তৈরির কিছুদিন পর, ঘটনাক্রমে একবার এক ব্রাহ্মণকে সাহায্য করার জন্য, অর্জুন অস্ত্রাগারে প্রবেশ করেন। সেখানে তিনি যুধিষ্ঠিরের সাথে দ্রৌপদীকে এক শয্যায় দখতে পান। এই কারণে ইনি ১২ বৎসর বনবাসের জন্য গৃহত্যাগ করেন।

যুধিষ্ঠিরের রাজসূয় যজ্ঞে ঈর্ষান্বিত হয়ে দুর্যোধন শকুনি মামার পরামর্শে কপট পাশাখেলায় আমন্ত্রণ জানান। এই খেলায় যুধিষ্ঠির দ্রৌপদীসহ রাজ্যপাট হারান। এরপর দুর্যোধনের নির্দেশে দুঃশাসন রজস্বঃলা দ্রৌপদীর চুলধরে সভায় আনেন। কর্ণের পরামর্শে প্রকাশ্য সভায় দুঃশাসন দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করা শুরু করলে, দ্রৌপদীর কাতর আহ্বানে কৃষ্ণ অলৌকিকভাবে তাঁকে অশেষ কাপড় দ্বারা আবৃত করে রাখেন। দ্রৌপদীর এই অপমানের কারণে, ভীম দুঃশাসনকে হত্যা করে তাঁর রক্ত পান করার অঙ্গীকার করেন। দ্রৌপদীও প্রতিজ্ঞা করেন, দুঃশাসনের রক্তে যতক্ষণ পর্যন্ত না ভীম তাঁর চুল বেঁধে দেয়, সে পর্যন্ত ইনি চুল বাঁধবেন না। সভামধ্যে দ্রৌপদীকে অপমান করার জন্য দুর্যোধন বাম উরু প্রদর্শন করলে, ভীম দুর্যোধনের উরুভঙ্গের প্রতিজ্ঞা করেন। এতসব ঘটনায় বিচলিত হয়ে ধৃতরাষ্ট্র সকলকে মুক্তি দেন। এরপর দুর্যোধন ও শকুনির পরামর্শে যুধিষ্ঠিরকে তাঁরা পুনরায় পাশাখেলায় আহ্বান করেন। এবারও যুধিষ্ঠির হেরে যান এবং ১২ বত্সর বনবাস ও ১ বত্সর অজ্ঞাতবাসের শাস্তি পান। পাণ্ডবরা রাজ্য হারিয়ে বনবাসের পথে গেলে দ্রৌপদী তাঁদের সাথে যান। এই সময় ইনি বিভিন্নভাবে যুধিষ্ঠিরকে কৌরবদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে উত্তেজিত করতে থাকেন।

বনে যাবার আগে সূর্যদেবতা দ্রৌপদীকে একটি তাম্রপাত্র দান করেছিলেন। এই পাত্রে কোন কিছু রান্না করে দ্রৌপদী যতক্ষণ না খেতেন, ততক্ষণ যতলোকই উক্ত পাত্র থেকে আহার করুক না কেন তা উক্ত খাদ্যে পূর্ণ থাকতো। দুর্বাসা সামান্য কারণেই রেগে গিয়ে ভীষণ অভিশাপ দিতেন। তাই দুর্বাসাকে দিয়ে দ্রৌপদীকে অভিশপ্ত করার জন্য, দুর্যোধন প্রথমে দুর্বাসা মুনিকে সন্তুষ্ট করেন। পরে দুর্বাসা যখন তাঁকে বর দিতে ইচ্ছা করলেন, তখন- দুর্যোধন বলেন যে, দ্রৌপদীর আহারের পর দুর্বাসা যেন তাঁর দশহাজার শিষ্য নিয়ে পাণ্ডবদের অতিথি হন। দুর্বাসা সেই বর দিয়ে পাণ্ডবদের বাসস্থান কাম্যকবনে আসেন। দ্রৌপদীর আহার শেষে দুর্বাসা দশহাজার শিষ্য নিয়ে পাণ্ডবদের অতিথি হয়ে আহার প্রার্থনা করেন এবং শিষ্যদের সাথে স্নান করতে যান। দ্রৌপদী দুর্বাসার অভিশাপের ভয়ে অত্যন্ত কাতর হয়ে কৃষ্ণের কাছে প্রার্থনা করতে থাকেন। কৃষ্ণ সেখানে উপস্থিত হয়ে দ্রৌপদীর কাছ থেকে তাম্রপাত্রের গায়ে লেগে থাকা সামান্য শাকান্ন আহার করেন। আহার শেষে কৃষ্ণ বলেন যে, বিশ্বাত্মা যেন এতে তৃপ্ত হয়। এর ফলে দুর্বাসা এবং তাঁর দশ হাজার শিষ্যের ক্ষুধা দূর হয়ে যায়। বিষয়টি দুর্বাসা বুঝতে পেরে, লজ্জিত হয়ে অন্যপথে চলে যান। 

বদরিকাশ্রমের কাছে বসবাসকালে, গঙ্গায় সুগন্ধী পদ্মফুল ভেসে যেতে দেখে দ্রৌপদী উক্ত পদ্মসংগ্রহের জন্য ভীমকে অনুরোধ করেন। ভীম উক্ত পদ্ম সংগ্রহের জন্য অগ্রসর হয়ে গন্ধমাদন পর্বতে উপস্থিত হন। সেখানে তাঁর অগ্রজ ও পবনদেবের অপর পুত্র হনুমানের সাথে দেখা হয়। প্রথমে ভীম হনুমানকে চিনতে না পেরে, হনুমানের সাথে যথার্থ ব্যবহার করেন নি। পরে হনুমান তাঁর অনুজ হিসাবে ভীমকে প্রশ্রয় দেন এবং আত্মপরিচয় দেন। এরপর পদ্ম সংগ্রহের জন্য ভুল করে মানুষের অগম্য স্বর্গপথে ভীম রওনা দিলে, হনুমান সঠিক পথের সন্ধান দেন। এই পথে অগ্রসর হয়ে ভীম কুবেরের অনুচরদের পরাজিত করে উক্ত পদ্ম সংগ্রহ করে দ্রৌপদীকে উপহার দেন।

জটাসুর নামক এক রাক্ষস পাণ্ডবদের সাথে ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে বাস করতেন। একদিন ভীম মৃগয়ায় গেলে, এই রাক্ষস যুধিষ্ঠির, নকুল, সহদেব ও দ্রৌপদীকে হরণ করে। ভীম ফিরে এসে প্রকৃত বিষয় অবগত হয়ে এই অসুরকে হত্যা করে সকলকে উদ্ধার করেন। অর্জুন স্বর্গে অস্ত্রশিক্ষার জন্য গেলে, তাঁর ফিরে আসার প্রতীক্ষায় কৈলাসপর্বতের কাছে পাণ্ডবরা যখন প্রতীক্ষা করছিলেন, তখন দ্রৌপদীর প্ররোচনায় ভীম কুবেরের অনুচর রাক্ষসদেরকে সেখান থেকে বিতারিত করেন। কাম্যকবনে পাণ্ডবরা ফিরে এসে যখন বসবাস করছিলেন, তখন পাণ্ডবদের অনুপস্থিতে জয়দ্রথ দ্রৌপদীকে হরণ করেন। পাণ্ডবরা জয়দ্রথকে ধরে এনে লাঞ্ছিত করতে থাকলে, যুধিষ্ঠির তাঁকে রক্ষা করেন। কিন্তু ভীম তাঁর মাথায় অর্ধাস্ত্র বাণদ্বারা পঞ্চচূড়া তৈরি করে পাণ্ডবদের দাসরূপে বেড়াতে আদেশ করেন। এরপরও যুধিষ্ঠির তাঁকে মুক্তি দেন।

একবৎসর অজ্ঞাতবাসকালে বিরাটের প্রাসাদে ইনি সৌরন্ধ্রী নামে রানী সুদেষ্ণার পরিচারিকা হিসাবে ছিলেন। এই সময় বিরাটরাজের শ্যালক দ্রৌপদীর রূপে মুগ্ধ হয়ে তাঁর কাছে বিবাহের প্রস্তাব দিলে, দ্রৌপদী তা প্রত্যাখান করেন। এরপর কীচকের বারবার অনুরোধে সুদেষ্ণা মদ আনার অছিলায় দ্রৌপদীকে কীচকের ঘরে পাঠান। কীচক দ্রৌপদীকে ধরার চেষ্টা করলে, দ্রৌপদী তাঁকে ঠেলে ফেলে দিয়ে বিরাটের রাজসভায় উপস্থিত হন। এরপর কীচক রাজসভায় এসে সর্বসমক্ষে দ্রৌপদীর চুল ধরে তাঁকে লাথি মারেন। এই সময় পাণ্ডবরা উক্ত সভায় আত্মগোপন করেছিলেন বলে তাঁরা এসবই সহ্য করেন। দ্রৌপদী রাত্রে গোপনে ভীমের কাছে গিয়ে, তাঁকে এর প্রতিশোধ নেবার জন্য উত্তেজিত করেন। পরে ভীমের পরামর্শে দ্রৌপদী কীচককে তাঁর সাথে সন্ধ্যাবেলায় নাট্যশালায় মিলিত হওয়ার অনুরোধ করেন। দ্রৌপদীর এই আহ্বানে কীচক সন্ধ্যাবেলায় নাট্যশালায় উপস্থিত হলে, ভীম তাঁকে হত্যা করেন। কীচকের মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে যাবার সময় কীচকের ভাইয়েরা দ্রৌপদীকেও চিতায় দেবার জন্য বন্দী করে শ্মশানে নিয়ে যান। এই সময় পাণ্ডবদের ছদ্মনামে দ্রৌপদী বার বার ডাকতে থাকলে, ভীম পিছনের দরজা দিয়ে শ্মশানে উপস্থিত হয়ে সকলকে হত্যা করে দ্রৌপদীকে উদ্ধার করেন।

কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পূর্বে কৃষ্ণ যখন পাণ্ডবদের মতামত গ্রহণের জন্য উপস্থিত হন। তখন দ্রৌপদী তাঁর মুক্ত কেশ দেখিয়ে যুদ্ধের জন্য পাণ্ডবদের উত্তেজিত করেন। যুদ্ধের সপ্তদশ দিনে ভীম দুঃশাসনকে হত্যা করে প্রতিজ্ঞা স্বরূপ তার বক্ষ চিরে রক্তপান করেন এবং দ্রৌপদীর কেশ এই রক্তে ভিজিয়ে তা বেঁধে দেন।
দ্রৌপদীর কারণেই প্রতিজ্ঞা স্বরূপ যুদ্ধের শেষে ভীম দুর্যোধনের উরুভঙ্গ করেন। এরপর মৃতপ্রায় দুর্যোধনের কাছে কৃপাচার্য, কৃতবর্মা ও অশ্বত্থামা আসেন। এই সময় দুর্যোধন অশ্বত্থামাকে সেনাপতি হিসাবে নিয়োগ করেন এবং ভীমের ছিন্নমুণ্ডু আনার নির্দেশ দেন। অশ্বত্থামা এদের সাথে করে রাত্রিবেলায় পাণ্ডব শিবিরে যান এবং কৃপাচার্য, কৃতবর্মাকে দ্বার রক্ষায় রেখে পাণ্ডব শিবিরে প্রবেশ করে পাণ্ডব শিবিরের সকলকেই ঘুমন্ত অবস্থায় হত্যা করেন। এই সময় পঞ্চপাণ্ডব, কৃষ্ণ, দ্রৌপদী ও সাত্যকি অন্যত্র থাকায় তাঁরা রক্ষা পান। এই হত্যাকাণ্ডে অন্যান্য পাণ্ডববীরদের সাথে দ্রৌপদীর সকল সন্তান মৃত্যবরণ করে। উল্লেখ্য পঞ্চপাণ্ডবের ঔরসে ইনি যে পাঁচটি পুত্রের জন্ম দেন। এঁরা হলেন- যুধিষ্ঠিরের ঔরসে প্রতিবিন্ধ্য, ভীমের ঔরসে সুতসোম, অর্জুনের ঔরসে শ্রুতকর্মা, নকুলের ঔরসে শতানীক ও সহদেবের ঔরসে শ্রুতসোম ।

এই হত্যার প্রতিশোধ হিসাবে ইনি অশ্বত্থামাকে হত্যা করে তার মাথার মণি এনে দেবার জন্য, ভীমকে অনুরোধ করেন। পরে অর্জুন ও কৃষ্ণ অশ্বত্থামাকে পরাজিত করলে, ভীম অশ্বত্থামার মাথার মণি এনে দ্রৌপদীকে দেন। কিন্তু অশ্বত্থামাকে এঁরা হত্যা করেন নি। বিভিন্ন প্রয়োজনে দ্রৌপদী ভীমের উপর অত্যন্ত নির্ভশীল ছিলেন। কিন্তু স্বয়ংবর সভার আগে থেকেই ইনি অর্জুনের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন। ঘটনাক্রমে পঞ্চপাণ্ডবের স্ত্রী হলেও, ইনি অর্জুনকেই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন। এই কারণে মহাপ্রস্থানে যাবার পথে মেরুপর্বত পার হওয়ার পর তাঁর পতন হয়েছিল।

ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের মতে- রাম সীতার বনবাসকালে অগ্নি ভবিষ্যৎবাণী করেন যে, সাতদিনের মধ্যে রাবণ সীতাকে অপহরণ করবেন। এরপর রাম অগ্নিকে অনুরোধ করে সীতার রক্ষার ভার দেন এবং মূল সীতার পরিবর্তে একটি ছায়া সীতা বানিয়ে রামের সঙ্গী হিসাবে প্রদান করেন। রাবণ এই ছায়া সীতাকেই অপহরণ করেছিলেন। সীতার অগ্নিপরীক্ষার সময় ছায়াকে রক্ষা করে মূল সীতাকে রামের কাছে ফিরিয়ে দেন। পরে এই ছায়া সীতা একশত বত্সর মহাদেবের আরাধনা করে পাঁচবার স্বামী প্রার্থনা করেন। সেই কারণে পরবর্তীকালে দ্রৌপদীর জন্ম হয়।
ইনি সত্যযুগে বেদবতী, ত্রেতাতে ছায়া সীতা এবং দ্বাপরে দ্রৌপদী হিসাবে জন্মগ্রহণ করেন। এর অপরাপর নাম : অযোনিজন্মা, অযোনিজা, অযোনিসম্ভবা, অযোনিসম্ভূতা।
 







 

8 comments:

  1. দ্রেীপদীকে নিয়ে কৌতুহল ছিলো। মনোযোগ দিয়ে লেখাটি পড়লাম। ধন্যবাদ।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ফোন থেকে ঠিক ত্রিশ সেকেন্ডে ডাউনলোড হচ্ছে ।

      Delete
    2. ডেস্কটপ এ ডাউনলোড হচ্ছে না

      Delete
    3. ফায়ার ওয়াল বন্ধ করুন , আর বাংলাদেশ থেকে হলে VPN সফটওয়্যার ব্যবহার করুন ।

      Delete
  2. Indro Da, ACK theke jei Mahabharat ta 3te mota mota hardbound volume ey beroye, box-set hishebey, egulo meeliye ee ki ota banaye ora? Na ota alada?

    ReplyDelete
    Replies
    1. ওদের বক্স সেট টা ইংরেজী তে প্রকাশিত , ওটা এখনো দেখিনি আমি , সম্ভবত এগুলোই ,।

      Delete