Sunday, July 2, 2023

Post # 1127 Bengali Amarchitra Katha 337

                                                                    ডাউনলোড করুন

 
 
মহাভারত - পাঁচ 
দ্রোণাচার্য ছিলেন ভরদ্বাজ মুনির পুত্র। আশ্রমে পড়াশোনা করা ছাড়াও তিনি সেখানে থেকেই তপস্যা করেছিলেন। দ্রোণাচার্যের বিয়ে হয়েছিল শরদ্বান মুনির কন্যা এবং কৃপাচার্যের বোন কৃপীর সঙ্গে। তাঁর ছেলের নাম ছিল অশ্বত্থামা। দ্রোণাচার্য মহেন্দ্র পর্বতে গিয়ে শ্রী পরশুরামের কাছ থেকে অস্ত্র ও শস্ত্র প্রয়োগ এবং সংহার বিদ্যা জ্ঞান অর্জন করেছিলেন।
দ্রোণাচার্যকে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ধনুর্ধর বলে মানা হয়। তিনিই পাণ্ডব এবং কৌরবকে যুদ্ধ শিক্ষার সমস্ত জ্ঞান প্রদান করেছিলেন। বিশ্বের ইতিহাসের মহাভারতের যুদ্ধকে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর যুদ্ধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই যুদ্ধে গুরু দ্রোণাচার্য কৌরবদের সঙ্গে ছিলেন ঠিকই, কিন্তু আসলে তিনি মন থেকে ধর্মের পথে চলা পাণ্ডবদের জয় চেয়েছিলেন। গুরু দ্রোণ ছিলেন একজন ব্রাক্ষ্মণ। ব্রাক্ষ্মণ হয়েও তিনি ক্ষত্রিয়ের মতো যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন।
মহাভারতের যুদ্ধে দ্রোণাচার্য কৌরবদের পক্ষে যুদ্ধ করেছিলেন। ভীষ্ম শরশয্যায় যাওয়ার পর কর্ণের নির্দেশে দ্রোণাচার্যকে সেনাপতি করা হয়। গুরু দ্রোণের ক্রমবর্ধমান শক্তি দেখে পান্ডবদের দলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দ্রোণাচার্য ও তাঁর পুত্র অশ্বত্থামার রুদ্র রূপ দেখে পাণ্ডবরা তাদের পরাজয়ের কথা ভেবেছিলেন।

পাণ্ডবদের এমন পরিস্থিতি দেখার পর, শ্রীকৃষ্ণ ছলনার আশ্রয় নিয়েছিলেন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে দ্রোণাচার্য অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠলে দ্রোণকে বধ করার জন্য পাণ্ডবগণ শ্রীকৃষ্ণের সাথে পরামর্শ করেন। আর তখন শ্রীকৃষ্ণ পাণ্ডবদের বলেন কোনও ভাবে যদি গুরু দ্রোণের কানে অশ্বত্থামার মৃত্যুর খবর পোঁছানো যায় তাহলে সে সময় ধৃষ্টদ্যুম্ন তাঁকে হত্যা করবে। এই পরিকল্পনা অনুসারে যুদ্ধে অশ্বত্থামা নিহত হওয়ার খবরটি ছড়িয়ে দেওয়া হয়। তবে ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির মিথ্যা বলতে রাজি হননি। তাই, শ্রীকৃষ্ণের পরামর্শ‌ মতো ভীম পাণ্ডবপক্ষের ইন্দ্রবর্মার অশ্বত্থামা নামক হাতীকে হত্যা করেন। আর সেখানে তখন উপস্থিত ছিলেন যুধিষ্ঠির। আর একমাত্র গুরু দ্রোণ যুধিষ্ঠিরের কথাকেই বিশ্বাস করতেন। তাই যুধিষ্ঠির দ্রোণের উদ্দেশ্যে 'অশ্বত্থামা হতঃ- ইতি গজ' (অশ্বত্থামা নামক হাতী নিহত হয়েছে) বাক্য উচ্চারণ করেন। 'ইতি গজ' শব্দটি আস্তে বলাতে দ্রোণচার্য মনে করেন যে তাঁর পুত্র অশ্বত্থামার মৃত্যু সংবাদ দেওয়া হয়েছে।

ছেলের মৃত্যুর সংবাদ শোনার পরে দ্রোণাচার্য তাঁর অস্ত্র ত্যাগ করেন। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে দ্রৌপদীর ভাই ধৃষ্টদ্যুম্ন নিরস্ত্র দ্রোণাচার্যের শিরশ্ছেদ করেন।
অশ্বত্থামা যখন এই ঘটনাটি জানতে পেরেছিলেন, তখন তাঁর ক্রোধ অত্যধিক হয়ে ওঠে। শোক ও ক্রোধে ভরপুর অশ্বত্থামা প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, তিনি পাণ্ডবদের কোনও পুত্রকে জীবিত রাখবেন না। পিতার প্রতারণামূলক মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য অশ্বত্থামা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিল। পাণ্ডব মহাভারতের যুদ্ধে জিতেছিলেন ঠিকই, কিন্তু অশ্বত্থামা দ্রৌপদীর একজন পুত্রকেও জীবিত রাখেন নি।





 

4 comments:

  1. দ্রোণাচার্যকে নিয়ে লেখাটা মুগ্ধ হয়ে পড়লাম। অসাধারণ।

    ReplyDelete
  2. বোধহয় চল্লিশ বছর আগে পড়েছিলাম। আবার পড়তে বেশী রোমাঞ্চকর লাগলো। আপনার কাজকে সাধুবাদ জানাই। এগিয়ে চলুন

    ReplyDelete