গান্ধারী হলেন গান্ধাররাজ সুবলের কন্যা। তিনি গান্ধাররাজ্যের রাজকুমারী ছিলেন বলে তার নাম গান্ধারী। সিন্ধুনদের পশ্চিম তীর হতে আফগানিস্তানের অধিকাংশকে পুরাকালে গান্ধারদেশ বলা হতো। বর্তমান কান্দাহার প্রাচীন গান্ধার নগরী।গান্ধারী দুর্যোধনাদির মাতা ছিলেন। শকুনি তার জ্যেষ্ঠভ্রাতা।
বিদুরের সাথে পরামর্শ করে ভীষ্ম গান্ধাররাজ সুবলের কন্যা গান্ধারীর সাথে কুরুবংশের জ্যেষ্ঠপুত্র ধৃতরাষ্ট্রের বিবাহ দেন। গান্ধারী সুন্দরী ও শিক্ষিতা হলেও মাতা পিতার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আপত্তি না করে জন্মান্ধ স্বামীর হাতে আত্মসমর্পণ করেন। তিনি তার অন্ধস্বামীকে অতিক্রম করবেন না এই সংকল্প করে বস্ত্র খণ্ড দিয়ে নিজের দুই চোখ বেঁধে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি ব্যাসদেবের সেবা করায় তিনি বর দিয়েছিলেন গান্ধারী শতপুত্রের জননী হবেন। যথাকালে গান্ধারী গর্ভবতী হলেন কিন্তু কুড়ি মাস চলে গেলেও তার প্রসব হল না।এদিকে কুন্তীর পুত্রলাভের খবর পেয়ে গান্ধারী অত্যন্ত দুঃখিত হয়ে ধৃতরাষ্ট্রকে না জানিয়ে লোহার মুগুর দিয়ে নিজের গর্ভপাত করেন। এর ফলে তার গর্ভ হতে এক লৌহকঠিন মাংসপিণ্ড নির্গত হল। গান্ধারী দাসীদের তা নষ্ট করার হুকুম দিতে যাচ্ছিলেন এমন সময় ব্যাসদেব এসে তাকে নিষেধ করলেন। তিনি ভ্রুণকে শীতল জলে ভিজিয়ে শত ভাগে ভাগ করেন এবং তা ঘৃতপূর্ণ কলসে রাখেন। একবছর পর দুর্যোধন এবং একবছর এক মাসের মধ্যে দুঃশাসন, দুঃসহ, বিকর্ণ প্রভৃতি শতপুত্র ও দুঃশলা নামে একটি কন্যার জন্ম হল। জন্মমাত্রই দুর্যোধন গাধার ন্যায় চিৎকার করেছিলেন এবং নানা অমঙ্গলের চিহ্ন দেখা গিয়েছিল। বিদুর ও ব্রাহ্মণগন তখন দুর্যোধনকে ত্যাগ করতে বলেছিলেন। কিন্তু পুত্রস্নেহের জন্য ধৃতরাষ্ট্র তা করতে পারেন নি।
No comments:
Post a Comment