ডাউনলোড করুন
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে– সূর্যদেবতার ঔরসে ও কুন্তী দেবীর গর্ভে এঁর জন্ম হয়েছিল। একবার মহর্ষি দুর্বাসা কুন্তীর গৃহে অতিথি হিসাবে আসেন। কুন্তীর অতিথি সেবায় সন্তুষ্ট হয়ে- দুর্বাসা কুন্তীকে একটি মন্ত্র দান করেন। এই মন্ত্রের দ্বারা ইনি যে দেবতাকে স্মরণ করবেন, সেই দেবতাই এসে কুন্তীকে সংগম দ্বারা পরিতৃপ্ত করে পুত্র দান করবেন। কৌতুহলবশতঃ কুমারী অবস্থাতেই একবার কুন্তী সূর্য দেবতাকে ডেকে বসেন এবং সূর্যদেবের সাথে মিলনের ফলে ইনি গর্ভবতী হয়ে পড়েন। যথা সময়ে ইনি একটি পুত্র সন্তান লাভ করলে, লোকলজ্জার ভয়ে সেই পুত্রকে একটি পাত্রে রেখে জলে ভাসিয়ে দেন। এই পুত্রের নামই কর্ণ। সূতবংশীয় অধিরথ ও তাঁর স্ত্রী রাধা কর্ণকে জল থেকে উদ্ধার করে প্রতিপালন করেন। রাধার পুত্র হিসাবে কেউ কেউ তাঁকে রাধেয় নামে ডাকতো। এই দম্পতি কর্ণের নাম রেখেছিলেন বসুষেণ।
তথ্য সূত্র : গজেন্দ্র কুমার মিত্রের পাঞ্চজন্য ও onushilon.org ।
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে– সূর্যদেবতার ঔরসে ও কুন্তী দেবীর গর্ভে এঁর জন্ম হয়েছিল। একবার মহর্ষি দুর্বাসা কুন্তীর গৃহে অতিথি হিসাবে আসেন। কুন্তীর অতিথি সেবায় সন্তুষ্ট হয়ে- দুর্বাসা কুন্তীকে একটি মন্ত্র দান করেন। এই মন্ত্রের দ্বারা ইনি যে দেবতাকে স্মরণ করবেন, সেই দেবতাই এসে কুন্তীকে সংগম দ্বারা পরিতৃপ্ত করে পুত্র দান করবেন। কৌতুহলবশতঃ কুমারী অবস্থাতেই একবার কুন্তী সূর্য দেবতাকে ডেকে বসেন এবং সূর্যদেবের সাথে মিলনের ফলে ইনি গর্ভবতী হয়ে পড়েন। যথা সময়ে ইনি একটি পুত্র সন্তান লাভ করলে, লোকলজ্জার ভয়ে সেই পুত্রকে একটি পাত্রে রেখে জলে ভাসিয়ে দেন। এই পুত্রের নামই কর্ণ। সূতবংশীয় অধিরথ ও তাঁর স্ত্রী রাধা কর্ণকে জল থেকে উদ্ধার করে প্রতিপালন করেন। রাধার পুত্র হিসাবে কেউ কেউ তাঁকে রাধেয় নামে ডাকতো। এই দম্পতি কর্ণের নাম রেখেছিলেন বসুষেণ।
ইনি অন্যান্য
দেশের রাজপুত্রদের সাথে দ্রোণাচার্যের অস্ত্রশিক্ষা করেন।
অস্ত্রশিক্ষা শেষে ইনি অর্জুনের সকল অস্ত্রকৌশল দেখান এবং অর্জুনকে দ্বন্দ্ব
যুদ্ধে আহ্বান করেন।
কর্ণের পরিচয় অজ্ঞাত থাকায় অর্জুন এই আহ্বানে সাড়া দেন নাই।
কর্ণের এরূপ বীরত্বের পরিচয় পেয়ে দুর্যোধন তাঁর সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করে
অঙ্গরাজ্যের রাজপদে অভিষিক্ত করেন।
এরপর দ্রৌপদীর স্বয়ম্বর সভায় ইনি লক্ষ্যভেদের চেষ্টা করলে— দ্রৌপদী ঘোষণা দেন যে,
সূতপুত্রের গলায় মালা দেবেন না।
সে কারণে ইনি এই প্রতিযোগিতা থেকে বিরত থাকেন।
অর্জুন লক্ষ্যভেদে দ্রৌপদী লাভ করলে— অন্যান্য রাজন্যবর্গের সাথে ইনি পাণ্ডবদের
সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন এবং অর্জুনের কাছে পরাস্ত হন।
ইনি দ্রোণাচার্যের কাছে ব্রহ্মাস্ত্র বিদ্যা শিখতে চাইলে,
সূতপুত্র বলে দ্রোণাচার্য তাঁকে শিষ্য হিসাবে গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন।
এরপর ইনি
পরশুরামের কাছে গিয়ে ব্রাহ্মণ পরিচয়ে এই বিদ্যালাভ করেন।
একদিন পরশুরাম এঁর কোলে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছিলেন।
এমন সময় অলর্ক নামক একটি কীট কর্ণের উরু বিদীর্ণ করে।
গুরুর ঘুম ভেঙে যাবার ভয়ে ইনি যন্ত্রণা সহ্য করতে থাকলেন।
একসময় পরশুরাম ঘুম ভেঙে উঠে সকল বিষয় দেখে এবং কর্ণের কষ্ট সহিষ্ণুতা লক্ষ্য করে
তাঁর প্রকৃত পরিচয় জানতে চাইলেন।
অবশেষে কর্ণ ব্রাহ্মণ নয় জেনে এবং গুরুকে প্রতারণা করার জন্য অভিশাপ দিয়ে বললেন যে,
কপট উপায়ে ব্রহ্মাস্ত্র লাভের জন্য, কার্যকালে কর্ণ এই অস্ত্রের কথা ভুলে যাবেন।
আর একবার ইনি এক ব্রাহ্মণের হোম ধেনু হত্যা করার জন্য,
উক্ত ব্রাহ্মণ তাঁকে অভিশাপ দিয়ে বলেন যে,—
যুদ্ধকালে
এঁর মহাভয় উপস্থিত হবে,
পৃথিবী তাঁর রথের চাকা গ্রাস করবে এবং কোন এক বিশেষ প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করতে
সচেষ্ট হলে তাঁর হাতেই কর্ণের মৃত্যু হবে।
পরশুরামের কাছে
অস্ত্রশিক্ষা সমাপ্ত করে ইনি কলিঙ্গরাজের কন্যার স্বয়ংবর সভায় উপস্থিত হন।
সেখানে কলিঙ্গরাজ জরাসন্ধের সাথে যুদ্ধ হয়।
এই যুদ্ধে জরাসন্ধ সন্তুষ্ট হয়ে কর্ণকে মালিনীনগর দান করেন।
কর্ণ দুর্যোধনের পরামর্শদাতাদের অন্যতম ছিলেন।
পাণ্ডবদের জতুগৃহ দাহে ইনি পরামর্শ দিয়েছিলেন।
পাণ্ডবদের বনবাসকালীন সময়ে দ্বৈতবনে অবস্থানের সময় শকুনি ও কর্ণের পরামর্শে
দুর্যোধন পাণ্ডবদের দুর্দশা দেখতে যান।
সেখানে গন্ধর্বরাজের কাছে দুর্যোধন পরাজিত ও বন্দী হলে কর্ণ তাদের উদ্ধার করতে
ব্যর্থ হন।
অবশেষে অর্জুন তাদের রক্ষা করেছিলেন।
দুর্যোধনের বৈষ্ণবযজ্ঞকালে ইনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে,
অর্জুনকে হত্যা না করা পর্যন্ত পাদ-প্রক্ষালন বা জল গ্রহণ করবেন না।
আসুরব্রত অবলম্বন করে ইনি আবার প্রতিজ্ঞা করেন যে অর্জুন নিহত না হওয়া পর্যন্ত,
এঁর কাছে কেউ কোন কিছু প্রার্থনা করলে তাকে তিনি বিমুখ করবেন না।
কর্ণের দানশীলতা
পরীক্ষা করার জন্য কৃষ্ণ ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে এসে আহার করার জন্য তাঁর ছেলে
বৃষকেতুর মাংস চান।
কর্ণ তাঁর পুত্রকে হত্যা করে কৃষ্ণকে আহার করতে দেন।
কৃষ্ণ কর্ণের এই ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে এই সন্তানের জীবন দান করেন।
এই ব্রত পালনের সময় অর্জুনের পিতা ইন্দ্র
ব্রাহ্মণবেশ ধারণ করিয়া অর্জুনের জন্য তাঁর কুণ্ডলদ্বয় ও কবচ প্রার্থনা করেন।
কর্ণের পিতা সূর্য এ বিষয়ে কর্ণকে পূর্বেই সতর্ক করে দিলেও সত্য রক্ষার্থে কর্ণ তা
ইন্দ্রকে দান করেন।
তবে সূর্যের পরামর্শে অর্জুনকে হত্যা করার জন্য ইন্দ্রের কাছ থেকে একাগ্নি বাণ
প্রার্থনা করেন।
ইন্দ্র এই অস্ত্র একবার মাত্র ব্যবহারের সূযোগ দেন।
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের চতুর্দশ দিবসে কর্ণ ঘটোৎকচ বধে এই অস্ত্র প্রয়োগ করেছিলেন।
কুরুক্ষেত্রের
যুদ্ধের আগে কৃষ্ণ তাঁর জন্ম পরিচয় দিয়ে বলেছিলেন যে- পাণ্ডবদের সে অগ্রজ।
সুতরাং সে কারণে কর্ণের উচিৎ এই যুদ্ধ পরিহার করে পাণ্ডবদের সাথে ভাই হিসাবে মিলে
যাওয়া।
কর্ণ এই প্রস্তাবে রাজি হলে- অগ্রজ হিসাবে যুধিষ্ঠীরের পরিবর্তে কর্ণই রাজা হতেন।
কর্ণ রাজি হননি বেশ কয়েকটি কারণে-
ক। কুন্তি তাঁকে পরিত্যাগ করলে যাঁরা তাঁকে পিতামাতা হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন, তাঁদের সে পরিচয়েই পরিচিত থাকতে চেয়েছিলেন।
খ। দুর্যোধন তাঁকে রাজ্যদান করে সম্মান দিয়েছিলেন এবং তাঁর ভরসাতেই দুর্যোধন এই যুদ্ধে অগ্রসর হয়েছেন। সুতরাং কর্ণ সেখান থেকে ফিরে দুর্যোধনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারবেন না। যুধিষ্ঠির যাতে এই ঘটনা জানতে না পারে সেরূপ অনুরোধ করে কৃষ্ণকে জানান যে- যুধিষ্ঠির জানলে তিনি অগ্রজ হিসাবে কর্ণকে রাজ্যদান করবেন, আর সে রাজ্য কর্ণ দুর্যোধনকে দান করবেন।
ক। কুন্তি তাঁকে পরিত্যাগ করলে যাঁরা তাঁকে পিতামাতা হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন, তাঁদের সে পরিচয়েই পরিচিত থাকতে চেয়েছিলেন।
খ। দুর্যোধন তাঁকে রাজ্যদান করে সম্মান দিয়েছিলেন এবং তাঁর ভরসাতেই দুর্যোধন এই যুদ্ধে অগ্রসর হয়েছেন। সুতরাং কর্ণ সেখান থেকে ফিরে দুর্যোধনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারবেন না। যুধিষ্ঠির যাতে এই ঘটনা জানতে না পারে সেরূপ অনুরোধ করে কৃষ্ণকে জানান যে- যুধিষ্ঠির জানলে তিনি অগ্রজ হিসাবে কর্ণকে রাজ্যদান করবেন, আর সে রাজ্য কর্ণ দুর্যোধনকে দান করবেন।
কর্ণের মাতাপিতা
(কুন্তী ও সূর্য) কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে পাণ্ডবদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করতে নিষেধ
করেছিলেন।
কিন্তু কর্ণ তা অগ্রাহ্য করেছিলেন।
তবে প্রতিজ্ঞা করে বলেছিলেন অর্জুন ছাড়া অন্য কোন পাণ্ডবকে তিনি হত্যা করবেন না।
যুদ্ধের প্রারম্ভে ভীষ্ম কবচ-কুণ্ডল হীন কর্ণকে নীচ ও গর্বিত বলেছিলেন এবং পশুরাম
কর্তৃক অভিশপ্ত বলে ভীষ্ম তাঁকে অবজ্ঞা করেছিলেন।
সেই কারণে ইনি প্রতিজ্ঞা করে বলেছিলেন যে ভীষ্ম জীবিত থাকাকালীন অবস্থায় অস্ত্র
ধারণ করবেন না।
ভীষ্ম শরশয্যায় অবস্থানকালে কর্ণকে তাঁর জন্মবৃত্তান্ত অবগত করিয়ে পাণ্ডবদের
বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করতে নিষেধ করলে- কর্ণ দুর্যোধনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে
বলে তা অগ্রাহ্য করেন।
কুরুক্ষেত্রের
যুদ্ধের ত্রয়োদশ দিনে কর্ণ অপর ছয়জন মহারথের সাথে মিলিত হয়ে অর্জুন-পুত্র
অভিমন্যুকে হত্যা করতে সাহায্য করেন।
যুদ্ধের চতুর্দশ দিনে অর্জুনের জন্য রক্ষিত ইন্দ্র-প্রদত্ত একাঘ্নী বাণ নিক্ষেপে
ইনি ঘটোত্কচকে হত্যা করেন।
যুদ্ধের ষোড়শ দিনে দ্রোণের মৃত্যুর পর ইনি কৌরব-সেনাপতি পদে অভিষিক্ত হন।
অর্জুন ছাড়া অপর পাণ্ডবেরা তাঁর কাছে পরাজিত হলেও প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ হবে বলে- কাউকেই
ইনি হত্যা করেননি।
পরশুরাম ও ব্রাহ্মণের অভিশাপের কারণে ইনি হীনবল অবস্থায়,
অর্জুন অঞ্জলিক বাণে কর্ণের শিরশ্ছেদ করেন।
কর্ণের স্ত্রীর নাম ছিল পদ্মাবতী। তাঁর তিনজন সন্তানের নাম জানা যায়। এরাঁ হলেন -বৃষসেন, বৃষকেতু, চিত্রসেন। ইনি অঙ্গরাজ্যের অধিপতি ছিলেন বলে- এঁর অন্যান্য নাম ছিল- অঙ্গরাজ, অঙ্গাধিপ, অঙ্গাধিপতি, অঙ্গাধীশ, অঙ্গাধীশ্বর। সূর্যের পুত্র হিসাবে তাঁর নাম ছিল- অরুণাত্মজ, অর্কতনয়, অর্কনন্দন, অর্কপুত্র, অর্কসূত, অর্কসূনু।
কর্ণের স্ত্রীর নাম ছিল পদ্মাবতী। তাঁর তিনজন সন্তানের নাম জানা যায়। এরাঁ হলেন -বৃষসেন, বৃষকেতু, চিত্রসেন। ইনি অঙ্গরাজ্যের অধিপতি ছিলেন বলে- এঁর অন্যান্য নাম ছিল- অঙ্গরাজ, অঙ্গাধিপ, অঙ্গাধিপতি, অঙ্গাধীশ, অঙ্গাধীশ্বর। সূর্যের পুত্র হিসাবে তাঁর নাম ছিল- অরুণাত্মজ, অর্কতনয়, অর্কনন্দন, অর্কপুত্র, অর্কসূত, অর্কসূনু।
অর্জুন ও কর্ণ পূর্বজন্মে কি ছিলেন...!
রামায়ণ যুগের বানর রাজ সুগ্রীবের নাম নিশ্চয়ই সবাই শুনেছেন? সুগ্রীব ছিল সূর্যদেবের পুত্র! আর তার ভাই মহাশক্তিধর বালি আবার ছিল দেবতাদের রাজা ইন্দ্রের পুত্র! (অনেকটা অর্জুন ও কর্ণের মত)! বালি এতই শক্তিধর ছিল যে, একদিন সন্ধ্যকৃত্য করার সময় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় রাক্ষস রাজ্ রাবণ বালির উপর আক্রমণ করে বসে! কিন্তু বালি ধ্যানমগ্ন থেকেই নিজের লেজ দিয়ে রাবণ কে ধরে এনে নিজে বগলের নিজে ঢুকিয়ে রাখে!
সুগ্রীব তার সেই মহাশক্তিধর ভাই বালিকে বধ করতে ছল রচনা করেছিল! ঐ ছল রচনার রেশ ধরেই সুগ্রীব অভিশাপগ্রস্ত হয়েছিল এবং রামায়ণ যুগ শেষ হওয়ার পর ও মহাভারত যুগ শুরুর আগে সে এক রাক্ষস হয়ে জন্ম নিয়েছিল! নাম ছিল দম্ভোদভব; পূর্ব জন্মে সূর্যপুত্র সুগ্রীব পরজন্মে ছিল সূর্যের পরম ভক্ত; এবং কঠোর আরাধনা করে সে সূর্যদেব কে প্ৰসন্ন করে উনার কাছ থেকে এক সহস্র কবচের এক মহাশক্তিশালী সুরক্ষা প্রাপ্ত করেছিল! সেই কবচ গুলোর বিশেষত্ব ছিল এই যে, কাউকে সহস্র কবচের এক একটি ভেদ করতে হলে তাকে প্রতিবার এক হাজার বছর তপস্যার করে আসতে হবে এবং একটা কবচ কাটার পর যে কাটবে তার জীবনী শক্তি শেষ হয়ে সে মৃত্যু বরণ করবে! সেই এক হাজার কবচ প্রাপ্তির পর দম্ভোদব রাক্ষস সহস্র কবচ নামে পরিচিত হয়ে উঠল! আর এমন বজ্র কঠিন সহস্র কবচের সুরক্ষা পেয়ে সে মহা অত্যাচারী হয়ে উঠল এবং এক সময় সে দেবতাদের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করে দিল!
সেই সময় মহাদেবের পরামর্শে ভগবান বিষ্ণু দুই অংশ হয়ে ব্রহ্মমার মানসপুত্র ধর্ম ও মূর্তির ঘরে জমজ শিশু রূপে জন্ম নিলেন! তাদের নাম হল নর ও নারায়ণ!
হিমালয়ে কেদার নামক পর্বতশৃঙ্গটি মহাদেবের অত্যন্ত প্রিয় এবং বহুকাল আগে থেকেই মহাদেবের আশীর্বাদ ছিল যে, এখানে যদি কেউ একদিন ধ্যান করে সেটা হবে এক হাজার দিন ধ্যানের সমান! একটা সময় নর ও নারায়ণ সেই কেদারশৃঙ্গে গিয়ে মহাদেবের শিষ্যত্ব বরণ করেন এবং মহাদেব কর্তৃক মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রের জ্ঞান লাভ করে ধ্যানে লীন হয়ে গেলেন! এই ধ্যানমগ্ন অবস্থায় বহুকাল কেটে গেল! এক সময় রাক্ষস সহস্র কবচের নিকট সংবাদ পৌঁছল যে, নর ও নারায়ন নামক দুই ঋষি বহুকাল যাবৎ হিমালয়ের একটু পর্বতে ধ্যানমগ্ন হয়ে আছে; এবং তারা এতটাই শক্তি সঞ্চিত করেছে যে, তাদের মন্ত্র উচ্চারণের ত্যাজ পুরো পর্বতমালা কম্পিত হচ্ছে!
সহস্র কবচ খুব চিন্তিত হয়ে পড়ল এবং একদিন সে নর ও নারায়ণের উপর আক্রমণ করে বসল! নর ও নারায়ন একজন একজন করে পর্যায়ক্রমে দম্ভোদবের সাথে যুদ্ধ করতে লাগলেন এবং একটা একটা করে কবচ কাটতে লাগলেন এবং প্রতিবার কবচ কাটার যখন তাদের জীবনী শক্তি শেষ হয়ে যায় তখন একজন আরেক জন কে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রবলে বাঁচিয়ে তুলেন! এভাবে যখন ৯৯৯ টি কবচ কাটা পড়ল, তখন রাক্ষস সহস্র কবচ পালিয়ে সূর্য দেবের আশ্রয়ে চলে গেল! এবং সূর্যদেব তাকে নর ও নারায়নের হাত থেকে রক্ষা করতে তার অবশিষ্ট একটি কবচ সহ দেবী কুন্তীর গর্বে স্থাপন করে দেন! এবং কুন্তীর সেই পুত্রই হচ্ছে কর্ণ..! যাকে আমরা সূর্যপুত্র কর্ণও বলে থাকি! আর সেই নর ও নারায়ণ কে জানেন ? তাঁরা আর কেউ নন, নর হলেন স্বয়ং অর্জুন এবং নারায়ণ হলেন স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ !
পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় নর ও নারায়ণ বিষ্ণুর যুগল অবতার রূপে পূজিত হন!
তথ্য সূত্র : গজেন্দ্র কুমার মিত্রের পাঞ্চজন্য ও onushilon.org ।