Saturday, September 30, 2023

Post # 1169 Bengali Amarchitra Katha 387

                                                                      ডাউনলোড করুন

 

 আজ শেষ হয়ে গেল মহাভারত............

বাংলা অমরচিত্র কথায় মহাভারত এই ৩০তম খণ্ডে অসম্পূর্ণ থেকে গিয়েছিল , হিন্দি ইংরাজি তে ৪২ খণ্ডে শেষ হয়েছিল ,  প্রথমে যদিও বলাহয়েছিল যে ৬০ খণ্ডে সমাপ্ত হবে ।

 

প্ররথম দিন

বিরাট রাজা উত্তর ও শ্বেতার পুত্র শল্য ও ভীষ্মের হাতে নিহত হন। ভীষ্ম পাণ্ডবদের বহু সৈন্যকে হত্যা করেছিলেন।

দ্বিতীয় দিন

ভীষ্ম; অর্জুন ও শ্রীকৃষ্ণকে বেশ কয়েকবার আহত করেছিলেন। ভীম হাজার হাজার কলিঙ্গ ও নিষাদকে হত্যা করেছিলেন।

তৃতীয় দিন

ভীম এবং তার পুত্র ঘটোৎকচ একসঙ্গে দুর্যোধনের সেনাবাহিনীকে তাড়িয়ে দেন। কৃষ্ণ অর্জুনকে ভীষ্মের মুখোমুখি হওয়ার জন্য বলেন, কিন্তু তিনি তা করতে অক্ষম হন।

চতুর্থ দিন

কৌরবরা তাদের তীর দিয়ে অর্জুনকে আবৃত করেছিল, কিন্তু সে পরাস্ত হয়েছিল। ভীম কৌরব সৈন্যবাহিনীতে ক্ষোভের সৃষ্টি করেন এবং ১৪ জন কৌরব নিহত হন।

পঞ্চম দিন

শ্রীকৃষ্ণের প্রচারের পর যুদ্ধ শুরু হয়। ভীষ্ম; পাণ্ডব সেনাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন এবং সাত্যকিকে যুদ্ধ থেকে দূরে সরিয়ে দেন।

ষষ্ঠ দিন

পাণ্ডবরা মকরব্যুহ চালু করেছিল এবং কৌরবরা ক্রোঞ্চভ্যুহের আকারের একটি সেনাবাহিনী চালু করেছিল। এদিকে কৌরবদের পরাজয় দেখে দুর্যোধন ক্রুদ্ধ হতে থাকেন। ভীষ্ম আবারও, পাণ্ডবদের সৈন্যের ক্ষতি করেন।

সপ্তম দিন

অর্জুন কৌরব বাহিনীকে আক্রমণ করলেন। ধৃষ্টদ্যুম্ন যুদ্ধে দুর্যোধনকে পরাজিত করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভীষ্ম; পাণ্ডব বাহিনীর উপর আধিপত্য বিস্তার করেন।

অষ্টম দিন

ঘটোৎকচ তার মায়ায় দুর্যোধনের ওপর অত্যাচার করে। দিনের শেষে, ভীমের হাতে আরও নয়টি কৌরব নিহত হয়।

নবম দিন

কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ কেন, কোথায় ও কতদিন হয়েছিল?

ভীষ্ম; অর্জুনকে আহত করেন। কৃষ্ণকে তার ব্রত ভঙ্গ করে অস্ত্র ধরতে হয়। ভীষ্ম পাণ্ডবদের সৈন্যবাহিনীর ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেন।

দশম দিন

ভীষ্মের ভয়াবহ গণহত্যা দেখে শ্রীকৃষ্ণ পান্ডবদের কাছে তার মৃত্যুর প্রতিকার চাইতে বলেন। এরপর অর্জুন তাকে তীরের বিছানায় শুইয়ে দেন। তবে ভীষ্ম তার জীবন ত্যাগ করেন না।

একাদশ দিন

দ্রোণকে কৌরব বাহিনীর নতুন সেনাপতি করা হয়। অর্জুন কৌরবদের থেকে, যুধিষ্ঠিরকে বন্দী করার পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেয়।

দ্বাদশ দিন

শকুনি এবং দুর্যোধন যুধিষ্ঠিরকে বন্দী করার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু অর্জুন শেষ মুহূর্তে ব্যর্থ হন।

ত্রয়োদশ দিন

এই দিনে কৌরবরা চক্রব্যূহ তৈরি করেন, যা ভাঙতে যুধিষ্ঠির অভিমন্যু সহ ভীমকে পাঠান। তবে শুধুমাত্র অভিমন্যুই এই ব্যূহতে প্রবেশ করতে পারে। তিনি একাই কৌরবদের প্রভুদের সাথে যুদ্ধ করেন এবং বীরগতি লাভ করেন। এর পরের দিনই অর্জুন জয়দ্রথকে হত্যা করার প্রতিজ্ঞা করেন।

চতুর্দশ দিন

জয়দ্রথকে বাঁচানোর জন্য, দ্রোণ তাকে সেনাবাহিনীর পিছনে লুকিয়ে রাখেন কিন্তু শ্রী কৃষ্ণের সূর্যাস্তের কারণে, তিনি বেরিয়ে আসেন এবং অর্জুনের হাতে নিহত হন। এই দিনে দ্রোণের হাতে দ্রুপদ ও বিরাট নিহত হন।

পনেরতম দিন

এই দিনে, পাণ্ডবরা দ্রোণাচার্যকে বিশ্বাস করায় যে অশ্বত্থামার মৃত্যু হবে। এই অশ্বত্থামা ছিল একটি হাতি, যাকে ভীম হত্যা করেন। এতে নিরাশ হয়ে দ্রোণ সমাধি নেন। এই অবস্থায় ধৃষ্টদ্যুম্ন দ্রোণের শিরচ্ছেদ করেন।

ষোড়শ দিন

দুর্যোধনের নির্দেশে, কর্ণকে অদম্য শক্তি দিয়ে ঘটোৎকচকে হত্যা করতে হয়। এই তীর তিনি অর্জুনের জন্য রেখেছিলেন।

কুন্তীর কাছে দিনের প্রতিশ্রুতির কারণে সে নকুল ও সহদেবকে পরাজিত করেও হত্যা করে না। এই দিনে দুশাসনও ভীমের হাতে নিহত হয় এবং সে তার বুক চিরে তার রক্ত ​​পান করে।

সপ্তদশ দিন

কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ কেন, কোথায় ও কতদিন হয়েছিল?

কর্ণ; ভীম ও যুধিষ্ঠিরের মুখোমুখি হন কিন্তু কুন্তীর কাছে প্রতিশ্রুতির কারণে তাদের হত্যা করেন না। এরপর কর্ণ ও অর্জুনের মধ্যে যুদ্ধ হয়। কর্ণের রথের চাকা ভেঙে পড়লে শ্রীকৃষ্ণের নির্দেশে অর্জুনের হাতে অসহায় অবস্থায় কর্ণ নিহত হন। এই দিনে ২২ কৌরবকেও হত্যা করা হয়।

অষ্টাদশ দিন

ভীম, অবশিষ্ট কৌরব এবং সহদেব, শকুনিকে হত্যা করেন। তার পরাজয় বিশ্বাস করে, দুর্যোধন একটি পুকুরে লুকিয়ে থাকে, কিন্তু যখন তাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়, তখন সে গদা নিয়ে ভীমের সাথে যুদ্ধ করে।

তারপর ভীম ছলনা করে দুর্যোধনের উরুতে আঘাত করেন, যার ফলে দুর্যোধনের মৃত্যু হয়। এইভাবে পাণ্ডবরা বিজয়ী হয়।

অশ্বত্থামা দ্রৌপদীর পাঁচ পুত্র, ধৃষ্টদ্যুম্ন এবং শিখণ্ডী প্রভৃতি সমস্ত পঞ্চালকে হত্যা করেন। যখন অশ্বত্থামা ব্রহ্মাস্ত্র ব্যবহার করেন কৃষ্ণ অশ্বত্থামাকে কলিযুগের শেষ অবধি কুষ্ঠরোগী হিসেবে বেঁচে থাকার অভিশাপ দেন।

কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পরে কি হয়েছিল?

মহাভারতের যুদ্ধের পরে, কৌরবদের দিক থেকে ৩ জন যোদ্ধা অবশিষ্ট ছিল – কৃতবর্মা, কৃপাচার্য এবং অশ্বত্থামা।

যেখানে পাণ্ডবদের পক্ষে যুযুৎসু, যুধিষ্ঠির, অর্জুন, ভীম, নকুল, সহদেব, কৃষ্ণ, সাত্যকি প্রমুখ ব্যাক্তি অবশিষ্ট ছিলেন। যুধিষ্ঠির উভয় পক্ষের সৈন্যদের শ্মশান ও তর্পণ করেন। এরপর রাজপ্রাসাদ থেকে অনাগ্রহের কারণে সমস্ত পাণ্ডব হিমালয়ে চলে যান, এবং সেখানেই তাদের জীবন পূর্ণ হয়।





 

Friday, September 29, 2023

Post # 1168 Bengali Amarchitra Katha 385

                                                                         ডাউনলোড করুন

 

রীকৃষ্ণ ছিলেন প্রখর কূটবুদ্ধিসম্পন্ন পুরুষ এবং মহাভারতের যুদ্ধ ও তার পরিণতিতে তাঁর প্রগাঢ় প্রভাব ছিল। তিনি পাণ্ডব এবং কৌরবদের মধ্যে শান্তি স্থাপন করতে যথাসম্ভব উদ্যোগী হয়েছিলেন। কিন্তু যখন তাঁর সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে তখন তিনি ক্রূর কূটনীতিকের ভূমিকা গ্রহণ করেন। যুদ্ধকালে পিতৃ-পিতামহের বিরুদ্ধে সঠিক মনোবল নিয়ে যুদ্ধ না করার জন্য তিনি অর্জুনের উপর ক্রুদ্ধ হন। একবার তাঁকে আঘাত করার অপরাধে কৃষ্ণ একটি রথের চাকাকে চক্রে পরিণত করে ভীষ্মকে আক্রমণ করতে উদ্যত হন। তখন ভীষ্ম সমস্ত অস্ত্র পরিত্যাগ করে কৃষ্ণকে বলেন তাঁকে হত্যা করতে। কিন্তু এরপর অর্জুন কৃষ্ণের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন এবং পূর্ণ উদ্যম নিয়ে যুদ্ধ করার প্রতিজ্ঞা করেন। কৃষ্ণ যুধিষ্ঠির এবং অর্জুনকে নির্দেশ দেন যাতে তারা ভীষ্মের দেওয়া যুদ্ধজয়ের বর ফিরিয়ে দেয়, কারণ ভীষ্ম স্বয়ং সেই যুদ্ধে পাণ্ডবদের প্রতিপক্ষ হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ভীষ্মকে এ কথা জানানো হলে তিনি এ কথার অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝতে পেরে কীভাবে তিনি অস্ত্র পরিত্যাগ করবেন সে উপায় পাণ্ডবদের বলে দেন। তিনি বলেন যে, যদি কোন নারী যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করে তবেই তিনি অস্ত্রত্যাগ করবেন। পরের দিন কৃষ্ণের নির্দেশে শিখণ্ডী, অর্থাৎ যিনি পূর্বজন্মে অম্বা ছিলেন তিনি অর্জুনের সাথে যুদ্ধে যোগদান করেন এবং ভীষ্ম তাঁর অস্ত্রসকল নামিয়ে রাখেন। এছাড়াও কৃষ্ণ ধৃতরাষ্ট্রের জামাতা জয়দ্রথকে বধ করতে অর্জুনকে সহায়তা করেন। জয়দ্রথের কারণেই অর্জুনের পুত্র অভিমন্যু দ্রোণাচার্যের চক্রব্যূহে প্রবেশ করেও বেরিয়ে আসার উপায় অজ্ঞাত থাকায় কৌরবদের হাতে নিহত হয়েছিলেন। কৃষ্ণ কৌরবদের সেনাপতি দ্রোণাচার্যের পতনও সম্পন্ন করেছিলেন। তিনি ভীমকে নির্দেশ দিয়েছিলেন অশ্বত্থামা নামক একটি হাতিকে বধ করতে এবং তাৎপর্যপূর্ণভাবে দ্রোণাচার্যের পুত্রের নামও অশ্বত্থামা। এরপর কৃষ্ণের নির্দেশে যুধিষ্ঠির দ্রোণাচার্যকে গিয়ে বলেন যে অশ্বত্থামা নিহত হয়েছেন এবং তারপর খুব মৃদুস্বরে বলেন যে সেটি একটি হাতি। কিন্তু যেহেতু যুধিষ্ঠির কখনও মিথ্যাচার করতেন না তাই দ্রোণাচার্য তাঁর প্রথম কথাটি শুনেই মানসিক ভাবে অত্যন্ত আহত হন ও অস্ত্র পরিত্যাগ করেন। এরপর কৃষ্ণের নির্দেশে ধৃষ্টদ্যুম্ন দ্রোণের শিরশ্ছেদ করেন।

কর্ণের সাথে অর্জুনের যুদ্ধের সময় কর্ণের রথের চাকা মাটিতে বসে যায়। তখন কর্ণ যুদ্ধে বিরত থেকে সেই চাকা মাটি থেকে ওঠানোর চেষ্টা করলে কৃষ্ণ অর্জুনকে স্মরণ করিয়ে দেন যে কৌরবেরা অভিমন্যুকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে যুদ্ধের সমস্ত নিয়ম ভঙ্গ করেছে। তাই তিনি নিরস্ত্র কর্ণকে বধ করে অর্জুনকে সেই হত্যার প্রতিশোধ নিতে আদেশ করেন। এরপর যুদ্ধের অন্তিম পর্বে কৌরবপ্রধান দুর্যোধন মাতা গান্ধারীর আশীর্বাদ গ্রহণ করতে যান যাতে তার শরীরের যে অঙ্গসমূহের উপর গান্ধারীর দৃষ্টি নিক্ষিপ্ত হবে তাই ইস্পাতকঠিন হয়ে উঠবে। তখন কৃষ্ণ ছলপূর্বক তার ঊরুদ্বয় কলাপাতা দিয়ে আচ্ছাদিত করে দেন। এর ফলে গান্ধারীর দৃষ্টি দুর্যোধনের সমস্ত অঙ্গের উপর পড়লেও ঊরুদ্বয় আবৃত থেকে যায়। এরপর যখন দুর্যোধনের সাথে ভীম গদাযুদ্ধে লিপ্ত হন তখন ভীমের আঘাত দুর্যোধনকে কোনভাবে আহত করতে ব্যর্থ হয়। তখন কৃষ্ণের ইঙ্গিতে ভীম ন্যায় গদাযুদ্ধের নিয়ম লঙ্ঘন করে দুর্যোধনের ঊরুতে আঘাত করেন ও তাকে বধ করেন। এইভাবে কৃষ্ণের অতুলনীয় ও অপ্রতিরোধ্য কৌশলের সাহায্যে পাণ্ডবেরা কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ জয় করে। এছাড়াও কৃষ্ণ অর্জুনের পৌত্র পরীক্ষিতের প্রাণরক্ষা করেন, যাকে অশ্বত্থামা মাতৃগর্ভেই ব্রহ্মাস্ত্র নিক্ষেপ করে আঘাত করেছিলেন। পরবর্তীকালে পরীক্ষিতই পাণ্ডবদের উত্তরাধিকারী হন।







 

Thursday, September 28, 2023

Post # 1167 Bengali Amarchitra Katha 383

                                           ডাউনলোড করুন

যুধিষ্ঠির যুদ্ধ এড়াবার জন্য তাঁর পাঁচ ভাইয়ের জন্য পাঁচটি গ্রাম প্রার্থনা করলে দুর্যোধন তাও প্রত্যাখ্যান করেনফলে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে দেখা দেয় যুদ্ধের পূর্বে দুর্যোধন উলুকের দ্বারা পাণ্ডবদের প্রতি কটুবাক্য বর্ষণ করানঅন্যায় যুদ্ধে অর্জুনপুত্র অভিমন্যুকে হত্যা করার সময় সপ্তরথীদের মধ্যে দুর্যোধন ছিলকর্ণবধের পর কৃপাচার্য সন্ধির পরামর্শ দিলে দুর্যোধন তা প্রত্যাখ্যান করেনযুদ্ধের ১৮ দিনে দুর্যোধনের সকল সৈন্য নিহত হলে- ইনি পালিয়ে দ্বৈপায়ন হ্রদে যানমায়া দ্বারা জলের স্তম্ভ তৈরি করে সেখানে লুকিয়ে থাকেনএই সময় দুর্যোধনের পক্ষের তিন সেনাপ্রধান অশ্বত্থামা, কৃপাচার্য ও কৃতবর্মা যুদ্ধের পরামর্শ করতে এলে- তিনি পরদিনের জন্য এই আলোচনা স্থগিত রাখতে বলেনএই আলোচনা কয়েকজন শিকারী শুনে পাণ্ডবদের কাছে এসে দুর্যোধনের অবস্থানের কথা জানানপাণ্ডবরা সেখানে এলে, ভীমের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন উল্লেখ্য ইনি ভীমকে হত্যা করার জন্য তের বত্সর এক লৌহ মূর্তির উপর গদা প্রহারের অভ্যাস করেছিলেনসরস্বতী নদীর দক্ষিণ প্রান্তে উভয়ের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়গদা যুদ্ধে ভীম অত্যন্ত বলশালী হলেও দুর্যোধন অত্যন্ত কৌশলী ছিলেনকৃষ্ণের ইক্তি ভীম অন্যায়ভাবে দুর্যোধনের উরুতে আঘাত করে তা ভেঙে দেনউল্লেখ্য গদা যুদ্ধে কটি দেশের নিম্নে আঘাত করা অন্যায় বলে বিবেচিত হতউরু ভঙ্গের পর ভীম তাঁর বাম পা দিয়ে দুর্যোধনের মাথা নিষ্পেষণ করেনএই অন্যায় যুদ্ধ দেখে উপস্থিত বলরাম ভীমকে হত্যা করতে অগ্রসর হলে কৃষ্ণ তাঁকে নিবারণ করেনদুর্যোধন এই অন্যায় যুদ্ধের জন্য কৃষ্ণকে তিরস্কার করেন

পাণ্ডবেরা মৃতপ্রায় দুর্যোধনকে পরিত্যাগ করে চলে গেলে, সেখানে কৃপাচার্য, কৃতবর্মা ও অশ্বত্থামা আসেন এরপর দুর্যোধন অশ্বত্থামাকে সেনাপতি হিসাবে নিয়োগ করেন এবং ভীমের ছিন্নমুণ্ডু আনার নির্দেশ দেনএই তিনজনই রাত্রিকালে পাণ্ডব শিবিরে প্রবেশ করে ঘুমন্ত সকলকেই হত্যা করেনএই সময় পঞ্চপাণ্ডব কৃষ্ণ ও সাত্যকি অনত্র্য থাকায় তাঁরা রক্ষা পানঅশ্বত্থামা দুর্যোধনকে এই সংবাদ প্রেরণ করলে আনন্দ চিত্তে প্রাণত্যাগ করেনঅস্ত্রাঘাতে মৃত্যুর জন্য ইনি স্বর্গলাভ করেন






 

Wednesday, September 27, 2023

Post # 1166 Bengali Amarchitra Katha 381

                                                                             ডাউনলোড করুন

 সঞ্জয় ছিলেন মহাভারতে বর্ণিত রাজা ধৃতরাষ্ট্র-এর রথের সারথি এবং ব্যাসদেব-এর শিষ্য।সারথি হলেও তিনি ছিলেন একজন সৎ ও ন্যায়পরায়ন মানুষ।হস্তিনাপুরের তৎকালীন মহারাজ ধৃতারাষ্ট্রের প্রিয় সারথি ছিলেন তিনি।সঞ্জয় ছিলেন সূত- (সারথি) বংশজাত।শ্রীমদ্ভাগবত গীতার (০১/১৩/৩২) এখানে সঞ্জয়কে গাবল্গন বলা হয়েছে অর্থাৎ সূত গাবল্গন হচ্ছেন সঞ্জয়ের পিতা।অর্থাৎ তিনি গবলগনের পুত্র ছিলেন।এই বিদ্বান ও স্পষ্টবক্তা সঞ্জয় আবার ছিলেন জন্মান্ধ রাজা ধৃতরাষ্ট্রের অন্যতম মন্ত্রীও। ধৃতরাষ্ট্রকে তিনি সব সময়েই সৎ পরামর্শ দিয়েছেন। ব্যাসদেবের প্রসাদে সঞ্জয় দিব্য দৃষ্টি লাভ করে ধৃতরাষ্ট্রকে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের বিবরণী শুনিয়েছেন।কারন তিনি তাঁর গুরু ব্যাসদেবের কৃপায় যুদ্ধ ক্ষেত্রে উপস্থিত না-থেকেও দিব্য চোখে সব দর্শন করতে পারতেন। এই সময় ধৃতরাষ্ট্র নিজের বা কৌরবদের পক্ষ নিয়ে কোনও অসত্য উক্তি করলে, তিনি কঠোর ভাবে তার সমালোচনা করেছেন। মহাযুদ্ধের শেষদিনে সাত্যকির হাতে সঞ্জয় বন্দী হন, কিন্তু ব্যাসদেবের হস্তক্ষেপে তিনি মুক্তি পান।এরপর ধর্মপুত্র মহারাজ যুধিষ্ঠির হস্তিনাপুরের রাজসিংহাসনে বসলে তিনি সঞ্জয়কে বহুবিধ গুরুত্বপূর্ণ কর্মের দায়িত্ব দেন।যুধিষ্টিরের রাজ্য শাসনের পনেরো বৎসর পরে যখন মহারাজ ধৃতরাষ্ট্র নিজ পত্নী রানী গান্ধারীকে নিয়ে বানপ্রস্থে চলে যাচ্ছেন।তখন মহামতী বিদুর ও পান্ডবজননী রানী কুন্তির সঙ্গে সঞ্জয়ও তাঁদের সাথী হন।তারপর কঠোর তপস্যায় বিদুরের আত্মত্যাগের পর যখন মহারাজ ধৃতরাষ্ট্র,রানী গান্ধারী ও রানী কুন্তি তপস্যারত অবস্থায় অরণ্যের দাবনলের অগ্নিতে নিজেদের আহুতি দেন, তখন ধৃতরাষ্ট্রের নির্দেশে সঞ্জয় তাঁদের ছেড়ে হিমালয়ে পর্বতের দিকে।তারপর তিনি হিমালয়ে গমন করেন এবং সেখানেই তাঁর জীবনাবসান ঘঠে।







  •  

    Tuesday, September 26, 2023

    Post # 1165 Bengali Amarchitra Katha 379

                                                                            ডাউনলোড করুন

     মহাভারত আর মাত্র ৪ টি খণ্ড বাকি রইল । এবং আমাদের অমর চিত্রকথা ও প্রায় শেষ হয়ে আসছে , এরপর যে ইন্দ্রজাল গুলির লিংক  ডাউন করা আছে সেগুলির  নতুন করে পি ডি এফ করার কাজ শেষ করা হবে ।





     

    Monday, September 25, 2023

    Post # 1164 Bengali Amarchitra Katha 377

                                                                        ডাউনলোড করুন

    পান্ডবদের অজ্ঞাতবাসের কথা সকলের জানা। সেই সময় অস্ত্রশস্ত্র কোথায় লুকিয়েছিল? তাও অনেকেরই জানা। পান্ডবরা ঠিক করে সেগুলি লুকিয়ে রাখবে একটি গাছের কোটরে। যে গাছের কোটরে সেগুলি লুকিয়ে রেখেছিল, সেই গাছের নাম হচ্ছে শমী বৃক্ষ।

    মহাভারতে উল্লেখিত সেই শমী বৃক্ষ কিন্তু দেখতে পাবেন এ রাজ্যেই। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গে। রাজ্যের দক্ষিন দিনাজপুর জেলার হরিরামপুরের হাতিডুবা গ্রামে। আর এই গাছ দেখতেই শুধু রাজ্যের বিভিন্ন জেলার মানুষ নন, দেশ-বিদেশের মানুষও ভিড় জমান এই হাতিডোবা গ্রামে।  আনাচে কানাচে।

    এলাকার মানুষের বিশ্বাস, ওই গাছের কোটরেই পান্ডবরা লুকিয়ে রেখেছিল তাদের অস্ত্রশস্ত্র। আর তাহলে সেই গাছটির বয়স কত হবে? এই প্রাচীর গাছটির বয়স আন্দাজ করা খুবই কঠিন। স্থানীয় ষাটোর্ধ ব্যক্তিরাও বলছেন, তাঁরা ছোট থেকেই একইভাবে দেখে আসছেন গাছটি। আবার বাবা-দাদুর কাছেও একই গল্প শুনেছিলেন। তাঁরাও নাকি ওই গাছটি একইভাবে দেখে এসেছেন। মহাভারতের পান্ডবদের সঙ্গে এই সম্পর্কের ইতিহাসও শুনে এসেছেন। এখন সেই লোককথা ছড়িয়ে রয়েছে গ্রামের আনাচে কানাচে।

     

    এবার আসা যাক শমীবৃক্ষের কথায়। যার বৈজ্ঞানিক নাম Prosopis cineraria। Fabacea পরিবারের অন্তর্গত উদ্ভিদের পাতা খানিক লজ্জাবতী গাছের পাতার ন্যায়। এই গাছটি অবশ্য বড় হয় না। সাধারণত, তিন থেকে পাঁচ মিটার অর্থাৎ প্রায় দশ ফুট থেকে সাড়ে ১৬ ফুটের মতো উচ্চতা। এই গাছটি শুধু ভারতে রয়েছে এমন নয়, আফগানিস্তান, বাহারিন, ইরান, ওমান, পাকিস্তান, সৌদি আরব, ইউনাইটেড এমিরেটাস থেকে ইয়েমেন – সর্বত্রই দেখা যায়। আবার ভারতের বিভিন্ন রাজ্যেও দেখা যায়। তবে বিভিন্ন রাজে এই গাছের নাম বিভিন্ন। যেমন পশ্চিমবঙ্গে একে শমী বৃক্ষ বলে। মহারাষ্ট্র এবং উত্তরপ্রদেশেও শমী বলা হয়। তবে তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশে বলা হয় জাম্মি (jammi), গুজরাটে খিজরো (khijro), রাজস্থানে খেজরি (khejri), হরিয়ানায় জান্টি (janti) ও পাঞ্জাবে জান্ড (jand)। এই গাছের ওষধি গুণও রয়েছে।






     

    Sunday, September 24, 2023

    Post # 1163 Bengali Amarchitra Katha 375

                                                       

                                                                           ডাউনলোড করুন

    পঞ্চপান্ডবদের বারো বছর বনবাস আর একবছর অজ্ঞাতবাসকালে ঘটনাটি ঘটেছিল গান্ধারদেশে। সেটা ছিল পান্ডবদের বনবাসের শেষ বছর। এরপরই শুরু হবে অজ্ঞাতবাস। ধর্মযুদ্ধ আগত। আর সেই ধর্মযুদ্ধে জয়ী হয়ে যুধিষ্ঠির হবেন সম্রাট। তাই যমের ইচ্ছা হল ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠিরকে একবার পরীক্ষা করে দেখার।
    যম হরিণরূপে এক ব্রাহ্মণের অরণি-মন্থ চুরি করেন। অরণি-মন্থ হল একটি দণ্ড যা পাথরে ঘষে যজ্ঞের আগুন জ্বালানো হয়। তাই ঋষির যজ্ঞ নষ্ট হতে বসেছে। ঋষি যুধিষ্ঠিরের শরণাপন্ন হলেন। যুধিষ্ঠিরের কাছে এসে বললেন, আমার অরণি আর মন্হ গাছে টাঙ্গানো ছিল, এক হরিণ এসে তার শিঙ্গে আটকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। আপনারা সেটি উদ্ধার করে দিন যাতে আমাদের যজ্ঞের অগ্নিহোত্রের হানি না হয়।
    এ কথা শুনে যুধিষ্ঠির তাঁর ভ্রাতাদের সঙ্গে নিয়ে যাত্রা করলেন হরিণের খোঁজে। বনমধ্যে হরিণকে দেখতে পেয়ে বাণ নিক্ষেপ করলেন কিন্তু কিছুতেই বিদ্ধ করতে পারলেন না। তারপরে আর দেখা গেল না সেই হরিণকে। পঞ্চপান্ডব তো হরিণকে আর খুঁজে পায় না ! পাবে কি করে সে তো যম। আর তিনি তো অদৃশ্য রয়েছেন।
    পাণ্ডবরা  বনে বনে ঘুরতে ঘুরতে গভীর জঙ্গলে এক বটবৃক্ষতলে এসে পৌছাল। ক্ষুধা তৃষ্ণায় কাতর হয়ে তারা সেই বটগাছের শীতল ছায়ায় বসলেন। যুধিষ্ঠিরের আদেশে তখন নকুল বটগাছে উঠে চারদিক চেয়ে জানালেন, জলের ধারে জন্মায় এমন অনেক গাছ দেখা যাচ্ছে। সারসের রবও শোনা যাচ্ছে, অতএব কাছেই জল পাওয়া যাবে।
    যুধিষ্ঠির বললেন,  নকুল তোমার ভ্রাতারা সবাই ক্লান্ত ও তৃষ্ণার্ত। তুমি খুব তাড়াতাড়ি জল নিয়ে এস তূণে করে। নকুল গাছ থেকে নেমে সেখানে গিয়ে সারস বেষ্টিত নির্মল জলাশয় দেখে যেই জল পান করতে ঝুঁকলেন, তখনই এক দৈববাণী শুনতে পেলেন। অন্তরীক্ষ থেকে কে বলছে, "বৎস, এই জল আমার অধিকারে আছে। জল পানের চেষ্টা কর না। আমার একটা নিয়ম আছে। আগে আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দাও। তারপর জল পান কর এবং নিয়ে যাও''। কিন্তু পিপাসিত নকুল সেই আদেশ অগ্রাহ্য করে শীতল জল যেই পান করল আর অমনি অচেতন হয়ে মাটিতে ঢলে পরল।
    নকুলের বিলম্ব থেকে কুন্তীনন্দন যুধিষ্ঠির বীর সহাদেবকে পাঠালেন। সেও নকুলের মত দৈববাণী না শুনে জল স্পর্শ করামাত্র অচেতন হয়ে মাটিতে পরে গেল। তারপর ধর্মরাজ সব্যসাচী অর্জুনকে পাঠালেন। তারও একই গতি হল। তারপর ভীম, দাদার আদেশ মত সেও গেল এবং তিন ভাইকে এমন অবস্থা দেখে অত্যন্ত রাগান্বিত হল। এবং সেও দৈববাণী না শুনে জলে হাত দিল এবং তারও একই দুর্দশা হল।
    ভ্রাতারা কেউ ফিরে এলেন না দেখে উদ্বিগ্ন যুধিষ্ঠির নিজেই জলাশয়ের সামনে গেলেন। দেখলেন স্বর্নময় পদ্মশোভিত সরোবর। সেই সরোবরের তীরে ভ্রাতারা সকলে অচৈতন্য হয়ে পড়ে আছেন। যুধিষ্ঠির এসব দেখে বিলাপ করতে লাগলেন শোকে আকুল হয়ে। ভ্রাতাদের গায়ে আঘাতের চিহ্ন এবং ভূমিতে অন্য কারো পদচিহ্ন নেই দেখে তিনি ভাবলেন, কোনও মহাপ্রাণী বধ করেছে এঁদের, অথবা দুর্যোধন কিংবা শকুনি করিয়েছে এই গুপ্তহত্যা।
    এবার সরোবরে নেমে জল পান করতে গেলেন যুধিষ্ঠির। এমন সময় উপর থেকে শুনলেন, "আমি মৎসশৈবালভোজী বক। তোমার এই মহাতেজস্বী ভ্রাতাদের আমিই পরলোকে পাঠিয়েছি। এই স্থানটি আমার অধিকারে। আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও, তারপরে জল পান কর। আমার প্রশ্নের উওর না দিয়ে যদি জল পান কর তাহলে তুমিও যাবে সেখানে"।
    যুধিষ্ঠির বললেন, আপনি কোন দেবতা ? আমার মহাবীর চার ভ্রাতাকে নিপাতিত করেছেন আপনি। আপনার কি অভিপ্রায় তা বুঝতে পারছি না। অত্যন্ত ভয় হচ্ছে আমার, কৌতুহলও হচ্ছে। ভগবান, কে আপনি ?
    যুধিষ্ঠির এই উওর শুনলেন "আমি যক্ষ"। তখন তালগাছের মতো মহাকায় বিকটাকার সূর্য ও অগ্নির মতো তেজস্বী এক যক্ষ গাছে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে মেঘগম্ভীর স্বরে বললেন, "আমি বহুবার বারণ করেছিলাম তবুও তোমার ভ্রাতারা গিয়েছিল জল পান করতে, তাই মেরেছি তাদের। যুধিষ্ঠির, আগে আমার প্রশ্নের উওর দাও, তারপর জল পান কর"।
    যুধিষ্ঠির বললেন, যক্ষ, তোমার অধিকূত বস্তু আমি নিতে চাইনা। তুমি প্রশ্ন কর, আমি নিজের বুদ্ধি অনুসারে উওর দেব।
    এরপর যক্ষ একে একে অনেকগুলি প্রশ্নগুলি করলেন এবং রাজা যুধিষ্ঠিরও একে একে তার উওরগুলি দিলেন।
    যক্ষ - কে সূর্যকে উর্ধ্বে রেখেছে ? সূর্যের চতুর্দিকে ভ্রমন করে কে ? কে তাঁকে অস্তে পাঠায় ? কোথায় প্রতিষ্ঠিত আছেন তিনি ?
    যুধিষ্ঠির - ব্রহ্ম সূর্যকে উর্ধ্বে রেখেছেন, দেবগণ তাঁর চতুর্দিকে বিচরণ করেন, তাঁকে অস্তে পাঠায় ধর্ম, তিনি প্রতিষ্ঠিত আছেন সত্যে।
    যক্ষ - ব্রাহ্মণের দেবত্ব কি কারণে হয় ? কোন ধর্মের জন্য তাঁরা সাধু ? কেন তাঁদের মানুষভাব হয় ? অসাধুভাব কেন হয় ?
    যুধিষ্ঠির - বেদাধ্যায়নের ফলে তাঁদের দেবত্ব, তপস্যার ফলে সাধুতা, তাঁরা নশ্বর এজন্য তাঁরা মানুষ, তাঁরা অসাধু হন পরনিন্দার জন্য।
    যক্ষ - ক্ষত্রিয়ের দেবত্ব কি ? সাধুধর্ম কি ? মানুষভাব কি ? অসাধুভাব কি ?
    যুধিষ্ঠির - অস্ত্রনিপুণতাই ক্ষত্রিয়ের দেবত্ব, যজ্ঞই সাধুধর্ম, ভয় মানুষভাব, শরণাগতকে পরিত্যাগই অসাধুভাব।
    যক্ষ - পৃথিবী অপেক্ষা গুরুতর কে ? আকাশ অপেক্ষা উচ্চতর কে ? বায়ু অপেক্ষা অধিক দ্রুতগামী কে ? তৃণ অপেক্ষা বিস্তৃত কে ?
    যুধিষ্ঠির - মাতা পৃথিবী অপেক্ষা গুরুতর, আকাশ অপেক্ষা উচ্চতর পিতা, বায়ু অপেক্ষা দ্রুতগামী মন, চিন্তা তৃণ অপেক্ষা বিস্তৃত।
    যক্ষ - সুপ্ত হয়েও চক্ষু মুদ্রিত করে না কে ? জন্মগ্রহণ করেও স্পন্দিত হয় না কে ? কার হৃদয় নেই ? বেগ দ্বারা বৃদ্ধি পায় কে ?
    যুধিষ্ঠির - নিদ্রাকালেও চক্ষু মুদ্রিত করে না মৎস্য, অন্ড প্রসূত হয়েও স্পন্দিত হয় না, পাষাণের হৃদয় নেই, বেগ দ্বারা বৃদ্ধি পায় নদী।
    যক্ষ - প্রবাসী, গৃহবাসী, আতুর ও মুমূর্ষু - এদের মিত্র কারা ?
    যুধিষ্ঠির - প্রবাসীর মিত্র সঙ্গী, গৃহবাসীর মিত্র ভার্যা, চিকিৎসক আতুরের মিত্র, মুমূর্ষুর মিত্র দান।
    যক্ষ - কি ত্যাগ করলে লোকপ্রিয় হওয়া যায় ? কি ত্যাগ করলে শোক হয় না ? কি ত্যাগ করলে মানুষ ধনী হয় ? কি ত্যাগ করলে সুখী হয় ?
    যুধিষ্ঠির - অভিমান ত্যাগ করলে লোকপ্রিয় হওয়া যায়, ক্রোধ ত্যাগ করলে শোক হয় না, কামনা ত্যাগ করলে লোকে ধনী হয়, লোভ ত্যাগ করলে সুখী হয়।
    তারপর যক্ষ বললেন, বার্তা কি ? আশ্চর্য কি ? পথ কি ? এবং সুখী কে ? আমার এই চার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে জল পান কর।
    বনবাসী রাজা যুধিষ্ঠির উওর দিলেন, পৃথিবীর এই মোহময় কড়াতে সূর্য্যরূপ অগ্নিদ্বারা, দিবারাত্রিরূপ কাষ্ঠ দ্বারা, মাসঋতুরূপ হাতাদ্বারা ঘাঁটিয়া ‘কাল’ জীবগণকে পাক করিতেছে, ইহাই বার্তা। প্রতিদিন জীবগণ মরিতেছে, অথচ অবশিষ্ট সকলে অমরত্ব আকাঙ্ক্ষা করে, ইহা অপেক্ষা আর আশ্চর্য কি ? বেদ বিভিন্ন, স্মৃতি বিভিন্ন, নানা মুনির নানা মত, ধর্মের মর্ম্ম অমীমাংসিত ভাবে রহিয়াছে; অতএব মহান ব্যক্তিগণ যে পথে গিয়াছেন, তাহাই মানুষের অনুকরণীয় পথ। অঋণী ও অপ্রবাসী হইয়া যে ব্যক্তি বেলাশেষে নিজগৃহে শাকমাত্র পাক করিয়া খায়, হে বারিচর, সেই সুখী। য
    যক্ষ বললেন, তুমি আমার প্রশ্নের যথাযথ উওর দিয়েছ, এখন বল, পুরুষ কে ? সর্বধনেশ্বর কে ?
    যুধিষ্ঠির উওর দিলেন, পুণ্যকর্মের শব্দ স্বর্গ ও পৃথিবী স্পর্শ করে, যত কাল সেই শব্দ থাকে তত কালই লোকে পুরুষ রূপে গণ্য হয়। প্রিয় - অপ্রিয়, সুখ - দুঃখ, অতীত ও ভবিষ্যৎ যিনি তুল্য জ্ঞান করেন তিনিই সর্বধনেশ্বর।
    যুধিষ্ঠিরের উত্তরে সন্তুষ্ট হয়ে যক্ষ বললেন, রাজা, আমি তোমার প্রতিটি উত্তরদানে প্রসন্ন হয়েছি। আমি তাই তোমার এই চার ভাইয়ের মধ্যে একজনকে জীবনদান করব। তুমি বল, কাকে তুমি বাঁচাতে চাও।
    যুধিষ্ঠির বললেন, আপনি নকুল বা সহদেবের জীবনদান করুন।
    যক্ষ আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি ভীম বা অর্জুনের জীবন না চেয়ে নকুল বা সহদেবের জীবন চাইলে কেন ? তোমার কাছে তাঁদের জীবন বেশী মূল্যবান কেন ?
    উত্তরে যুধিষ্ঠির বললেন, আমি, ভীম এবং অর্জুন মাতা কুন্তীর গর্ভজাত, কিন্তু নকুল ও সহদেব আমাদের অপর মাতা মাদ্রীর গর্ভজাত। আপনি যখন একজনকেই জীবনদান করবেন, তখন নকুল বা সহদেব জীবিত থাকলে দুই মাতারই একজন করে সন্তান এ সংসারে বেঁচে থাকবে। দুই মাতাকেই আমি সমান জ্ঞান করি। যক্ষ বললেন, ভরতশ্রেষ্ঠ, তুমি অর্থ ও কাম অপেক্ষা অনৃশংসতাই শ্রেষ্ঠ মনে কর, অতএব তোমার সমস্ত ভ্রাতাই জীবনলাভ করুন।
    ভীমসহ সকলেই প্রাণ ফিরে পেলেন, ক্ষুধাপিপাসাও দূর হল তাঁদের। যুধিষ্ঠির এবার যক্ষকে বললেন, আপনি অপরাজিত হয়ে এই সরোবর তীরে দাঁড়িয়ে আছেন এক পায়ে, কোন দেবতা আপনি ? আমার এই মহাবীর ভ্রাতাদের নিপাতিত করতে পারেন এমন যোদ্ধা আমি দেখি না। এঁরা জাগরিত হয়েছেন সুখে অক্ষত দেহে। বোধহয় আপনি আমাদের সুহৃৎ বা পিতা।
     
    যক্ষ বললেন, বৎস, আমি তোমার জনক ধর্ম। তুমি আমার কাছে বর চাও।
    যুধিষ্ঠির বললেন, যাঁর অরণি ও মন্হ হরিণ নিয়ে গেছে সেই ব্রাহ্মণের অগ্নিহোত্র যেন লুপ্ত না হয়।
    ধর্ম বললেন, তোমাকে পরীক্ষা করার জন্য আমিই মৃগরূপে হরণ করেছিলাম অরণি ও মন্হ। এখন তা ফিরিয়ে দিচ্ছি। তুমি এখন অন্য বর চাও।
    যুধিষ্ঠির বললেন, আমাদের বারো বছর অতিবাহিত হয়েছে বনে। এখন তেরো বছর উপস্হিত। আমরা যেখানেই থাকি না কেন, কোনও লোক যেন চিনতে না পারে আমাদের।
    ধর্ম বললেন, তাই হবে। তোমরা নিজ রূপে বিচরণ করলেও কেউ চিনতে পারবেনা তোমাদের। তোমরা তেরো বছর অজ্ঞাত হয়ে থেকো বিরাট রাজার নগরে। তোমরা যেমন ইচ্ছা সেইরকম রূপ ধারণ করতে পারবে।
    তারপর পান্ডবেরা অরণি ও মন্হ ব্রাহ্মনকে দিলেন আশ্রমে ফিরে গিয়ে॥
                                         
    .




                                                           


    Saturday, September 23, 2023

    Post # 1162 Bengali Amarchitra Katha 373

                                                                         ডাউনলোড করুন

     

    মহাভারতের ২৩ টি খণ্ড ব্লগে প্রকাশিত হোল ,আর বাকি থাকলো ৭ টি খণ্ড ,অমর চিত্র কথা ও প্রায় শেষ হয়ে এসেছে।  কয়েকটি বই যেগুলি আমার কাছে নেই সে গুলি পরে দেওয়া হবে  ।