Thursday, December 30, 2021

Post # 1068 Bengali Amarchitra Katha 254

                                                                          ডাউনলোড করুন

 হনুমান হলেন হিন্দু ধর্মের একজন দেবতা যিনি রামের একনিষ্ঠ ভক্ত। হিন্দু পুরাণে হনুমানকে বিশেষ স্থান দেয়া হয়েছে। রামায়ণ বর্ণিত হনুমান পবননন্দন হিসেবে হিন্দুদের নিকট পূজনীয়। রামায়ণের মূল চরিত্র রাম যাকে হিন্দুরা ভগবান বিষ্ণুর অবতার হিসেবে দাবি করে তার অনুগত চরিত্র হিসেবে পাওয়া যায় এই হনুমানকে। তিনি বায়ুদেবতার পুত্র। হিন্দুদের কাছে হনুমান রামভক্ত হিসেবে পরিচিত।

 এটি বিশ্বাস করা হয় যে ষোড়শ শতাব্দীর বিখ্যাত কবি ও সাধু গোস্বামী তুলসীদাস জি হনুমান চালিশা এবং রামচরিত মানস রচনা করেছিলেন। আর হিন্দু ধর্মে রামায়ণের পাশাপাশি হনুমান চালিশাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।

হনুমান চালিশা একটি গীতিকাব্য (কবিতা) হিসাবে হনুমান চালিশা নাম থেকেই বোঝা যায় যে এটি ভগবান শ্রী হনুমান জিকে দেওয়া হয়। এবং চালিসা মানে চল্লিশটি, এটি চল্লিশটি চার-পাদদেশে গঠিত। হনুমান চালিশায় ভগবান শ্রী হনুমান জিয়ার গুণাবলী এবং তাঁর দ্বারা সম্পাদিত বেশ কয়েকটি কঠিন কাজকে সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।যেহেতু হনুমান চালিশা পাঠ ভক্তদের দুর্দশা দূর করে, তাই ভক্তরা এটিকে সংকট মোচন হনুমান চালিশাও বলে থাকেন ।

|| শ্রী হানুমান চালিশা ||

|| দোহা ||

শ্রী গুরু চরণ সরোজ রজ নিজমন মুকুর সুধারি, বরণৌ রঘুবর বিমলয়শ জো দায়ক ফলচারি ||
বুদ্ধিহীন তনুজানিকৈ সুমিরৌ পবন কুমার, বল বুদ্ধি বিদ্য়া দেহু মোহি হরহু কলেশ বিকার ||

|| চৌপাঈ ||

জয় হনুমান জ্ঞান গুণ সাগর | জয় কপীশ তিহু লোক উজাগর ||
রামদূত অতুলিত বলধামা | অংজনি পুত্র পবনসুত নামা ||
মহাবীর বিক্রম বজরঙ্গী | কুমতি নিবার সুমতি কে সঙ্গী ||
কংচন বরণ বিরাজ সুবেশা | কানন কুংডল কুংচিত কেশা ||
হাথবজ্র ঔ ধ্বজা বিরাজৈ | কাংথে মূংজ জনেবূ সাজৈ ||
শংকর সুবন কেসরী নন্দন | তেজ প্রতাপ মহাজগ বন্দন ||
বিদ্য়াবান গুণী অতি চাতুর | রাম কাজ করিবে কো আতুর ||
প্রভু চরিত্র সুনিবে কো রসিয়া | রামলখন সীতা মন বসিয়া ||
সূক্ষ্ম রূপধরি সিয়হি দিখাবা | বিকট রূপধরি লংক জরাবা ||
ভীম রূপধরি অসুর সংহারে | রামচংদ্র কে কাজ সংবারে ||
লায় সংজীবন লখন জিয়ায়ে | শ্রী রঘুবীর হরষি উরলায়ে ||
রঘুপতি কীন্হী বহুত বডায়ী | তুম মম প্রিয় ভরতহি সম ভায়ী ||
সহস বদন তুম্হরো য়শগাবৈ | অস কহি শ্রীপতি কণ্ঠ লগাবৈ ||
সনকাদিক ব্রহ্মাদি মুনীশা | নারদ শারদ সহিত অহীশা ||
য়ম কুবের দিগপাল জহাং তে | কবি কোবিদ কহি সকে কহাং তে ||
তুম উপকার সুগ্রীবহি কীন্হা | রাম মিলায় রাজপদ দীন্হা ||
তুম্হরো মন্ত্র বিভীষণ মানা | লংকেশ্বর ভয়ে সব জগ জানা ||
য়ুগ সহস্র য়োজন পর ভানূ | লীল্য়ো তাহি মধুর ফল জানূ ||
প্রভু মুদ্রিকা মেলি মুখ মাহী | জলধি লাংঘি গয়ে অচরজ নাহী ||
দুর্গম কাজ জগত কে জেতে | সুগম অনুগ্রহ তুম্হরে তেতে ||
রাম দুআরে তুম রখবারে | হোত ন আজ্ঞা বিনু পৈসারে ||
সব সুখ লহৈ তুম্হারী শরণা | তুম রক্ষক কাহূ কো ডর না ||
আপন তেজ তুম্হারো আপৈ | তীনোং লোক হাংক তে কাংপৈ ||
ভূত পিশাচ নিকট নহি আবৈ | মহবীর জব নাম সুনাবৈ ||
নাসৈ রোগ হরৈ সব পীরা | জপত নিরংতর হনুমত বীরা ||
সংকট সেং হনুমান ছুডাবৈ | মন ক্রম বচন ধ্য়ান জো লাবৈ ||
সব পর রাম তপস্বী রাজা | তিনকে কাজ সকল তুম সাজা ||
ঔর মনোরধ জো কোয়ি লাবৈ | তাসু অমিত জীবন ফল পাবৈ ||
চারো য়ুগ পরিতাপ তুম্হারা | হৈ পরসিদ্ধ জগত উজিয়ারা ||
সাধু সন্ত কে তুম রখবারে | অসুর নিকন্দন রাম দুলারে ||
অষ্ঠসিদ্ধি নব নিধি কে দাতা | অস বর দীন্হ জানকী মাতা ||

রাম রসায়ন তুম্হারে পাসা | সাদ রহো রঘুপতি কে দাসা ||
তুম্হরে ভজন রামকো পাবৈ | জন্ম জন্ম কে দুখ বিসরাবৈ ||
অংত কাল রঘুবর পুরজায়ী | জহাং জন্ম হরিভক্ত কহায়ী ||
ঔর দেবতা চিত্ত ন ধরয়ী | হনুমত সেয়ি সর্ব সুখ করয়ী ||
সংকট কটৈ মিটৈ সব পীরা | জো সুমিরৈ হনুমত বল বীরা ||
জৈ জৈ জৈ হনুমান গোসায়ী | কৃপা করো গুরুদেব কী নায়ী ||
জো শত বার পাঠ কর কোয়ী | ছূটহি বন্দি মহা সুখ হোয়ী ||
জো য়হ পডৈ হনুমান চালীসা | হোয় সিদ্ধি সাখী গৌরীশা ||
তুলসীদাস সদা হরি চেরা | কীজৈ নাথ হৃদয় মহ ডেরা ||

 

 






 

Thursday, December 16, 2021

Post # 1067 Bengali Amarchitra Katha 253

                                                                              ডাউনলোড করুন

 


উপনিষদ বলেছেন - অতিথিদেবো ভব । অর্থাৎ অতিথিকে দেবতা জ্ঞান করো...

পুরাকালে অতিথিপরায়নাতার স্বরূপ কি ছিল তার পরিচয় বহন করছে 'সোনালী নকুল' আর 'একটি পায়রার আত্ম ত্যাগ' গল্প দুটি ।  কর্তব্য এবং প্রকৃত জ্ঞান বলতে কি বোঝায় ,এবং সত্যকে জানতে গেলে জানা যাবে যে এ দুয়ের মধ্যে কোন ভেদ নেই- এ কথাটাই স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠেছে 'জ্ঞানী কসাই' গল্পটিতে । 

এখানে তিনটি গল্পই বর্ণিত হয়েছে মহাভারত থেকে । 





 

Saturday, December 11, 2021

Post # 1066 Bengali Amarchitra Katha 252

                                                                            ডাউনলোড করুন  

 

 

মহর্ষি কশ্যপ ও দিতির পুত্র দানব বজ্রাঙ্গ। বজ্রাঙ্গের পত্নী বরাঙ্গী। বজ্রাঙ্গ ও বরাঙ্গীর পুত্রের নাম তারক বা তারকাসুর। বয়ঃপ্রাপ্ত হয়ে তারকাসুর দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠে। দেবতাদের পরাজিত করে সে স্বর্গলোক অধিকার করে এবং দেবতাদের ক্রীতদাসে পরিণত করে। তাঁর অত্যাচারে উৎপীড়িত দেবগণ পরিত্রাণের জন্য পিতামহ ব্রহ্মার শরণাপন্ন হন।
ব্রহ্মা দেবতাদের অভয় দিয়ে বলেন, শিব ও পার্বতীর যে অপরাজেয় পুত্র জন্মগ্রহণ করবেন তিনি সুরাসুরের অবধ্য তারকাসুরকে নিধন করবেন এবং স্বর্গরাজ্য পুনরায় দেবতাদের হবে। যথাকালে তপস্যানিরত শিবকে স্বামীরূপে পাওয়ার জন্য কঠোর পঞ্চাগ্নি তপস্যানিরতা পার্বতীর বিবাহ হয় এবং শিবতেজে পার্বতীর পুত্র কার্তিকেয়র জন্ম হয়। জন্মের পর ছয়জন কৃত্তিকা-মাতৃকা তাঁকে লালন-পালন করেন।
শিব ও পার্বতীর অমিততেজা এই পুত্র ছয়মুখে ছয় কৃত্তিকার স্তনদুগ্ধ পান করেছিলেন। ছয় মুখের জন্য তাঁর নাম ‘ষড়ানন’ বা ‘ষন্মুখ’। ছয়জন কৃত্তিকা-ধাত্রীজননীর স্তন্যপান করে বর্ধিত হন বলে তাঁর নাম হয় ‘কার্তিকেয়’ বা ‘কার্তিক’। জন্মের ষষ্ঠ দিন দেবসেনাপতিরূপে তাঁর অভিষেক হয় এবং ব্রহ্মার মানসকন্যা দেবসেনার সঙ্গে বিবাহ হয়। সপ্তম দিন তিনি তারকাসুরকে বধ করেন।
জন্মসূত্রে পিতা শিবের বীর্য ও গুণাবলীর যেমন তিনি উত্তরাধিকারী হন, তেমনি মাতা পার্বতীর শৌর্য ও বীর্যের উত্তরাধিকারও তিনি লাভ করেন। তাঁর অপ্রতিরোধ্য পরাক্রম ও দুর্জয় সাহস তাঁকে এনে দেয় দেব-সেনাপতির স্বীকৃতি। রামায়ণ, মহাভারত এবং প্রধান পুরাণগুলিতে কার্তিকের জন্মকথা ও কীর্তিকাহিণী সবিস্তারে বর্ণিত হয়েছে। পুরাণগুলির মধ্যে অন্যতম প্রধান স্কন্দপুরাণ প্রত্যক্ষত তাঁরই নাম বহন করছে। স্কন্দপুরাণ ভিন্ন অন্যান্য প্রধান যে পুরাণগুলিতে কার্তিকের উপাখ্যান বর্ণিত। সেগুলি হলো : মৎস্যপুরাণ, শিবপুরাণ, বামনপুরাণ, লিঙ্গপুরাণ, বায়ুপুরাণ, পদ্মপুরাণ, ব্রহ্মাণ্ডপুরাণ, অগ্নিপুরাণ, ব্রহ্মপুরাণ, কূর্মপুরাণ, বরাহপুরাণ, ভবিষ্যপুরাণ, ভাগবতপুরাণ এবং ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ। দেখা যায় উল্লিখিত প্রত্যেক পুরাণেই দেবতা ও অসুরদের প্রচণ্ড সংগ্রাম এবং দেবতাদের পরাজয়ের পটভূমিকায় শিব-পার্বতীর পুত্ররূপে কার্তিকের জন্ম। আবার কার্তিকের জন্ম-উপাখ্যানটি বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, কার্তিকের জন্মের পশ্চাতে ছিল শিব-পার্বতীর কঠোর তপস্যা। সন্তান আসবে পিতা-মাতার সংযম ও তপস্যার সেতুপথে-এটাই প্রাচীন ভারতীয় দাম্পত্য জীবনের মূল দর্শন। কার্তিকের স্ত্রীর নাম দেবসেনা। সেকারণেও তিনি ‘দেবসেনাপতি’ আবার দেবসেনাবাহিনীর নায়কত্বের জন্য তিনি ‘দেবসেনাপতি’।
কার্তিকের বর্ণনা —
কার্তিকের জন্ম অমাবস্যা তিথিতে। পরবর্তী পাঁচদিনে তাঁর প্রাপ্তবয়স্কতা লাভ। ষষ্ঠদিনে তাঁর দেবসেনাপতিত্বে অভিষেক এবং দেবসেনার আধিপত্য লাভ, যুদ্ধাভিমান ও বিজয়। একমতে তাঁর পত্নীর নাম ‘দেবসেনা’। তিনি ব্রহ্মার কন্যা। শুক্লা ষষ্ঠী তিথিতেই দেবসেনার সঙ্গে কার্তিকের বিবাহ। দেবসেনার অপর নাম ষষ্ঠী। শুক্লা ষষ্ঠী তিথি বিজয়াদি সকল অভীষ্টদায়িনী। বৌধায়ন গৃহ্যসূত্রে স্কন্দের একটি নামও ‘ষষ্ঠী’। লক্ষণীয়, আশ্বিনের শুক্লা ষষ্ঠী তিথিতেই দেবী দুর্গার বোধন অর্থাৎ দুর্গাপূজার সূচনা।
এর তাৎপর্য এই যে, ক্ষাত্রশক্তির সঙ্গে যখন ব্রহ্মতেজ সমন্বিত হয়, তখনি বিজয়াদি সর্বাভীষ্ট মানুষের করতলগত হয়। তখনি মানুষের মধ্যে শিবশক্তি অর্থাৎ শুভশক্তির উদ্বোধন ঘটে। সেই উদ্বুদ্ধ দেবাত্মশক্তির কাছে অসুরের পরাজয় অনিবার্য। কারণ, সমস্ত দেবাত্মশক্তির ওপর যাঁর আধ্যিপত্য সুপ্রতিষ্ঠিত, ত্রিভুবনের সমস্ত প্রতিরোধই তাঁর সম্মুখে চূর্ণবিচূর্ণ হতে বাধ্য। সেই আধ্যাত্মিক অর্থে যিনি দেবসেনাপতি, তাঁর কণ্ঠে বিধাতাকন্যার জয়মাল্য দোলে-তিনিই বিধাতাকন্যাকে লাভ করেন। বিধাতা কন্যার নাম ‘দেবসেনা’।
‘দেবসেনা’র অর্থ দেবশক্তি। অর্থাৎ দেবতাদের সম্মিলিত শক্তি কার্তিকের অধীন। সেজন্য তিনি দেবসেনাপতিরূপে স্বীকৃত। সম্মিলিত দেবাত্মশক্তিকে যথার্থভাবে ব্যবহার ও পরিচালনা করে সভ্যতাকে সুরক্ষিত রাখার গুরুদায়িত্ব তাঁর স্কন্ধে অর্পিত। দেবী দুর্গার পরিবার সমগ্র বিশ্বচরাচর। তাঁর স্নেহাঞ্চলে পশু, পাখি, সরীসৃপ, উদ্ভিদ, মানুষ-সকলেই আচ্ছাদিত। সেই বিশ্ব-পরিবার রক্ষার দায়িত্বে দেবীর পুত্র কার্তিকেয় নিযুক্ত। এই দায়িত্ব তিনি লাভ করেছেন দেবীর পুত্রের অধিকারে নয়, তাঁর আপন যোগ্যতায়।
তেজস্বী, ক্ষিপ্রকর্মা, সদা উদ্যমী, অকুতোভয়, অপরাজেয় ও সুদর্শন কার্তিকেয় শুধু স্বর্গ বা দেবলোকের সেনাপতি নন, সমগ্র মানবলোকেরও ঊর্ধ্বায়ত বীর্য ও শক্তির তিনি প্রতীক-বিগ্রহ। বস্তুত, কার্তিকের পরিচয় একজন বিশেষ দেবতারূপে নির্দিষ্ট হলেও তাঁর মধ্যে অন্তত রুদ্র, অগ্নি, বায়ু, ইন্দ্র ও বিষ্ণু-এই প্রধান বৈদিক পঞ্চদেবতার সংমিশ্রণ ঘটেছে। বৈদিক দেবভাবনা ভিন্ন পৌরাণিক, তান্ত্রিক ও লৌকিক নানা দেবভাবনা এবং দেবতার মানবিকীকরণ-অভীপ্সার সংমিশ্রণে কার্তিকের উপাসনা ও রূপভাবনা সমৃদ্ধ হয়েছে। সম্ভবত এই প্রক্রিয়া পূর্ণ পরিণতি প্রাপ্ত হয় গুপ্ত যুগে-খ্রিস্টীয় চতুর্থ-পঞ্চম শতকে। তবে তৈত্তিরীয় ব্রাহ্মণ, নারায়ণ উপনিষদ্, বৌধায়ন ধর্মসূত্র, মহাভারত, পাণিনির অষ্টাধ্যায়ী, কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র প্রভৃতি সাক্ষ্য থেকে জানা যায় যে, পৃথক দেবতা হিসাবে কার্তিক পূজিত হতে শুরু করেছেন খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীর বহু আগে থেকেই।
কার্তিকের বাহন —
কার্তিকের বাহন ময়ূর। আবার কিছু মতে কুক্কুট বা মোরগও কার্তিকের বাহন। বামনপুরাণের মতে দেবসেনাপত্যে অভিষিক্ত হওয়ার পর গরুড় কার্তিককে বাহন হিসাবে ময়ূরকে প্রদান করেছিলেন। বরাহপুরাণের মতে ঐ সময় পিতা শিব কার্তিকেয়কে ক্রীড়ার জন্য কুক্কুট উপহার দিয়েছিলেন। মহাভারতের মতে অগ্নিদেব এবং মৎস্যপুরাণের মতে বিশ্বকর্মা কার্তিকেয়কে কুক্কুট উপহার দিয়েছিলেন। তবে মহাভারত ও পুরাণের বর্ণনায়, পুরাণের প্রতিমালক্ষণ-বি
বৃতিতে, তন্ত্রের ধ্যানমন্ত্রে এবং প্রাচীন মুদ্রায় প্রধানত কার্তিককে ময়ূরবাহনরূপেই দেখানো হয়েছে। এমনকি পূর্বোক্ত অথর্ববেদের পরিশিষ্ট স্কন্দযাগেও কার্তিকের ময়ূরবাহনত্ব উল্লিখিত হয়েছে। কুক্কুট অধিকাংশ ক্ষেত্রে কার্তিকের হস্তধৃতরূপেই বর্ণিত, যাতে বোঝা যায় কুক্কুট তরুন শিবপুত্রের একটি প্রিয় ক্রীড়নক। প্রাণিতত্ত্ববিদগণের মতে, ময়ূর ও কুক্কুট উভয়েই সমবর্গীয় পক্ষী। যাহোক, পরিবার-সমন্বিতা মহিষাসুরমর্দিনীর সঙ্গে কার্তিককে আমরা ময়ূরবাহনরূপে দেখতে অভ্যস্ত। এমনকি মালয়েশিয়া এবং জাপানে কার্তিকের যে মূর্তি ও মন্দির দেখা যায় সেখানেও তিনি ময়ূরবাহন।
কেন কার্তিকের ময়ূরবাহন ?
ময়ূরের পাঁচটি প্রধান বৈশিষ্ট্য – সৌন্দর্য, যৌবনদৃপ্ততা, বীর্য, যোদ্ধৃত্ব এবং প্রাতরুত্থান। সৌন্দর্য, যৌবনদৃপ্ততা, বীর্য, যোদ্ধৃত্ব জন্য ময়ূর পক্ষীকুলে নৃপতিতুল্য। ভারতের জাতীয় পক্ষীও ময়ূর। দেবীর চার সন্তানের মধ্যে কার্তিকের সঙ্গে সর্বাংশেই তার সর্বাপেক্ষা বেশি সাদৃশ্য। দেবীর বাহন যেমন পশুরাজ, তাঁর পুত্রের বাহন তেমনি পক্ষীরাজ। বিষধর সর্প ময়ূরের আক্রমণ-নৈপুণ্য এবং পরাক্রমে শুধু যে পর্যুদস্ত হয় তাই নয়, একেবারে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। ময়ূরের কেকাধ্বনি নিশাবসানের সঙ্কেত ঘোষণা করে। তার প্রাতরুত্থান-অভ্যাস তার অনলসতা, অতন্দ্র সতর্কতা এবং জাড্যহীন তৎপরতার পরিচায়ক। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ময়ূরের উল্লিখিত পাঁচটি বৈশিষ্ট্য কুক্কুটের ক্ষেত্রেও একইভাবে প্রযোজ্য।
সমগ্র ত্রিভুবনের সুরক্ষার দায়িত্ব যাঁর স্কন্ধে অর্পিত সেই স্কন্দ-কার্তিকেয়ের বাহনের নিকট তো এই গুণগুলিই সর্বাগ্রে প্রকাশিত। আলস্য, তন্দ্রা, নিদ্রা, জড়তা, দীর্ঘসূত্রতা, অসতর্কতা ও অসাবধানতাকে নির্মমভাবে পদানত করতে না পারলে এবং যৌবনোচিত উদ্যম, যোদ্ধৃত্ব, বীর্য ও শক্তি প্রকাশ না করলে কি স্কন্দ-কার্তিকেয় দেবসেনাপতির মর্যাদা লাভ করতে পারতেন, না ত্রিলোকজয়ী তারকাসুরকে পরাভূত ও বিনাশ করতে পারতেন ? কী সংসারজীবনে, কী সাধন-জীবনে, কী কর্মজীবনে সার্থকতা নিহিত ঐ দুর্বলতাসমূহের দমনের এবং ঐ শক্তি প্রকাশের ওপর।
ঐ দমনের পরাকাষ্ঠা, ঐ শক্তি প্রকাশ তাঁর জীবন ও কর্মে দেখিয়েছিলেন বলেই দেবাসুর সংগ্রামে স্কন্দ-কার্তিকেয় চূড়ান্ত সাফল্য লাভ করেছিলেন। ময়ূর বিষধর সর্পকুলকে ধ্বংস করে আমাদের জীবনকে নিরুদ্বেগ করে। কার্তিকও সভ্যতার শত্রু অসুরকুলকে ধ্বংস করে সভ্যতার পরিত্রাতার ভূমিকায় একদা অবতীর্ণ হয়েছিলেন। জগতের বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে কার্তিকেয় ও তাঁর বাহন ময়ূরের গুণাবলীর তাৎপর্য আমাদের বিশেষ মনোযোগের দাবি রাখে।
সর্পের মতো ক্রূর ও খল মানুষেরা সভ্যতার শত্রু। এই সুন্দর পৃথিবীকে তারা প্রতিমুহূর্তে তাদের বিষাক্ত উপস্থিতিতে কলুষিত করছে। তাদের অবস্থান পৃথিবীর বাসযোগ্যতাকে বিনষ্ট করছে। পৃথিবীকে এই সর্পস্বভাব মানুষের প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে হলে প্রয়োজন সর্পহন্তা ময়ূরের মতো বীর্য ও যোদ্ধৃত্ব। বস্তুত, সর্পস্বভাব যেমন প্রায় সকল মানুষের মধ্যেই কম-বেশি নিহিত, তেমনি নিহিত ময়ূরস্বভাবও। আমাদের অন্তরস্থিত সর্পস্বভাবকে খর্ব ও ধ্বংস করতে হবে আমাদের অন্তরস্থিত ময়ূরস্বভাবের উদ্বোধনের মাধ্যমে।
ময়ূরের মধ্যে যেমন বীর্য ও যোদ্ধৃত্ব প্রকট, তেমনি প্রকট তার যৌবনদৃপ্ততা এবং সৌন্দর্য। যৌবনের ধর্মই হলো দুরতিক্রম্যকে অতিক্রমের উচ্চাভিলাষ, প্রতিবন্ধকের সম্মুখে নতিস্বীকারের প্রবল অনীহা। যৌবনের বৈশিষ্ট্য গতি-অধরাকে ধরার, দুর্লঙ্ঘ্যকে লঙ্ঘন করার দুর্নিবার আকাক্সক্ষা। আর তার মধ্যেই নিহিত যৌবনের প্রকৃত সৌন্দর্য। জড়তা, তন্দ্রা, আলস্য, নিদ্রা প্রৌঢ়ত্বের লক্ষণ এবং বার্ধক্যের ধর্ম।
যৌবনে যদি ঐগুলি দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে যৌবন রাহুগ্রস্ত হয়েছে, যৌবন তার সৌন্দর্য হারিয়েছে, কুশ্রীতা যৌবনকে গ্রাস করেছে। যৌবন এবং সৌন্দর্য যেন মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। পৃথিবীকে সর্পমুক্ত করা যেমন দুঃসাধ্য, তেমনি দুসাধ্য পৃথিবী থেকে স্বর্পস্বভাব মানুষকে বা মানুষের অন্তরস্থিত স্বর্পস্বভাবকে নির্মূল করা। কিন্তু যৌবনদৃপ্ত ময়ূর যেমন সর্প দেখলেই তার ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে, তীক্ষ্ণ চঞ্চু ও শাণিত নখরের আঘাতে তাকে খণ্ড-বিখণ্ড করে ফেলে, মানুষের মধ্যে যারা ময়ূরস্বভাব অথবা মানুষের মধ্যস্থিত ময়ূরস্বভাব তেমনি জগতের সর্পস্বভাব মানুষের অথবা মানুষের অন্তরস্থিত সর্পস্বভাবের সঙ্গে চিরন্তন সংগ্রামে লিপ্ত। এই সংগ্রামের মনোবৃত্তিই ময়ূরস্বভাব মানুষের অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য।
ময়ূরের পঞ্চম বৈশিষ্ট্য প্রাতরুত্থান। এটি তার স্বভাব। প্রাতরুত্থান স্বভাববিশিষ্ট ময়ূর নিদ্রালসতার কাছে আত্মসমর্পণ করে না। সভ্যতার স্থায়িত্ব, স্বাধীনতার স্থায়িত্ব নির্ভর করে মানুষের অনলস তৎপরতার ওপর। পৃথিবীকে সুন্দর রাখতে হলে, পৃথিবীর বাসযোগ্যতা অটুট রাখতে হলে প্রয়োজন ঐ অনলস তৎপরতার-ঐ অতন্দ্র সতর্কতার। দেবসেনাপতি কার্তিক ও তাঁর বাহন ময়ূরের কল্পনায় আমাদের পূর্বপুরুষগণ সেকথাই বোঝাতে চেয়েছিলেন।
কার্তিক দেবতার ধ্যান —
ॐ কার্তিকেয়ং মহাভাগং ময়ুরোপরিসংস্থিতম্।






 

Wednesday, November 24, 2021

Post # 1065 Bengali Amarchitra Katha 251

                                                                       ডাউনলোড করুন     


রূপকথার গল্প যুগ যুগ ধরে মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে ...তাই হয়ত এই গল্প গুলি চির সজীব, জিবন্ত হয়ে আছে এখনো, গল্প শুনতেও ভালবাসে সকলে , বিশেষ করে ছোটরা... ছোট্ট মেয়েটি থাকতে ঠাকুমা তাঁর ঠাকুমার কাছ থেকে যে গল্প শুনেছিলেন তিনি তা তাঁর নাতি নাতনিদের নিজের মতো করে বলতে ভালবাসতেন । বহু দূর দেশ ভ্রমন কালে কোন পথিক তাঁর যাত্রাপথে কোনও কাহিনী শুনে পরে যখন সেগুলি কারো কাছে বলতেন তখন দরকার মতো স্থান কাল পাত্র অদল বদল করে নেন । এই ভাবে গল্প পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে ছড়িয়ে পড়েছে অন্য প্রান্তে... বলা বাহুল্য , আর এই কারনেই ঈশপ ও পঞ্চতন্ত্র প্রনেতা বিষ্ণুশর্মার কাহিনী মধ্যে অনেক রকম মিল দেখতে পাওয়া যায় । 

এই কাহিনী টি বাংলার বহু পরিচিত লোককাহিনী ... সকলের জন্য বলাহয়েছে নতুন ভাবে । 





 

Tuesday, November 23, 2021

Post # 1064 Bengali Amarchitra Katha 249

 
 
শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসের কথা কারোরই অজানা নয়।তাঁর সম্বন্ধে মহাত্মা গান্ধী একদা বলেছিলেন, সত্যিকারের ধর্মাচারন যে কি তা হলো শ্রী রামকৃষ্ণের জীবন ।তাঁর জীবন আমাদের ঈশ্বরের মুখোমুখি হতে শেখায় । 
 শ্রী রামকৃষ্ণের বানী ছিল তাঁর জীবনের মতই অনাড়ম্বর । সহজ সরল গল্পের মাধম্যে অনেক সময় তিনি তাঁর কথা ব্যক্ত করেন । তাঁর গল্পে মানুষের অসঙ্গতি বা দুর্বলতা দেখে আমাদের মন কৌতুকাবহ হয়ে উঠলেও তিনি কিন্তু আমাদের মনে শেষ পর্যন্ত মানুষের প্রতিই বিশ্বাস রাখতে অনুপ্রাণিত  করেছেন ।  








Monday, November 22, 2021

Post # 1063 Bengali Amarchitra Katha 247

                                                                         ডাউনলোড করুন

জাতক  গৌতম বুদ্ধের অতীত জীবনের কাহিনীমূলক গল্পসাহিত্য। এটি ত্রিপিটকের অন্তর্গত এবং এর কথক  গৌতম বুদ্ধ স্বয়ং। বুদ্ধত্ব লাভের পর সিদ্ধার্থ গৌতম তাঁর অতীত জীবনের কথা স্মরণ করার ক্ষমতা অর্জন করেন। তখন তিনি শিষ্যদের সঙ্গে ধর্মালোচনাকালে প্রাসঙ্গিক উদাহরণ হিসেবে তাঁর অতীত জীবনের বহু ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। সেসব ঘটনার সংকলনই জাতক সাহিত্য।

খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতকে বুদ্ধঘোষ রচিত জাতকত্থবণ্ণনা নামক গ্রন্থে ৫৪৭টি জাতক অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর তেরো বছর পর আঠারো শতকে অধ্যাপক ফৌজবল লন্ডন পালি বুক সোসাইটির উদ্যোগে ইংরেজি অনুবাদসহ ছয় খন্ডে যে জাতকগ্রন্থ প্রকাশ করেন তাতেও জাতকের সংখ্যা ছিল পূর্ববৎ। কিন্তু ত্রিপিটকের সূত্তপিটক মতে বুদ্ধদেব ৫৫০ বার জন্ম পরিগ্রহ করেন। সে অনুযায়ী জাতকের সংখ্যা হওয়া উচিত ৫৫০টি।

জাতকের এই গল্পগুলি দীর্ঘকাল গুরুশিষ্য পরম্পরায় শ্রুতি থেকে স্মৃতিতে সংরক্ষিত ছিল। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে সম্রাট অশোকের পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠিত তৃতীয় বৌদ্ধমহাসঙ্গীতি (বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সম্মেলন) কালে জাতক গ্রন্থিত হয়। তখন পালি ভাষাতেই জাতকের গল্পগুলি লিখিত হয়েছিল; পরবর্তীকালে বাংলাসহ বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় তা অনূদিত হয়। বাংলায় জাতক অনুবাদ করেন ঈশাণচন্দ্র ঘোষ। তিনি ষোলো বছরে ছয় খন্ডে জাতকের অনুবাদ ও সম্পাদনা করেন।

প্রত্যেকটি জাতকের তিনটি অংশ থাকে: প্রত্যুৎপন্নবস্ত্ত, অতীতবস্ত্ত ও সমাধান। প্রত্যুৎপন্নবস্ত্ত হচ্ছে জাতকের উপক্রমণিকা অংশ। এখানে জাতকের উপলক্ষ ও প্রাসঙ্গিকতা বর্ণিত হয়; অর্থাৎ বুদ্ধ কখন, কোথায়, কাকে উপলক্ষ করে এবং কোন প্রসঙ্গে এই জাতক কাহিনী বিবৃত করেছিলেন তার বিবরণ থাকে এ অংশে। অতীতবস্ত্ত হচ্ছে জাতকের মূল অংশ, অর্থাৎ এখানে বুদ্ধের পূর্বজন্মের কাহিনীগুলি বর্ণিত হয়। আর শেষ অংশ সমাধানে প্রত্যুৎপন্নবস্ত্তর সঙ্গে অতীতবস্ত্তর চরিত্রগুলির অভিন্নতা বা যোগসূত্র স্থাপন করা হয়। অর্থাৎ জাতকে বর্ণিত চরিত্রগুলির কে কোন জন্মে কি ছিলেন সে পরিচয় এখানে তুলে ধরা হয়।

জাতকের সব কথাই উপদেশমূলক। এর বাণী কোনো গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এগুলি সর্বজনীন। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই জাতক থেকে মানবিক উপদেশাবলি গ্রহণ করতে পারে। এছাড়া জাতকে পুরাকালের আচার-অনুষ্ঠান, রীতি-নীতি, সমাজ-সংস্কৃতি, শিক্ষা-দীক্ষা, বিচার-আচার ইত্যাদির বিবরণ পাওয়া যায়। জাতকের রচনাকৌশলও অত্যন্ত হূদয়গ্রাহী। বাংলা সাহিত্যসহ বিশ্বের বহু সাহিত্য জাতকের নির্যাস গ্রহণ করে সমৃদ্ধ হয়েছে। 

তথ্য https://bn.banglapedia.org







 

Saturday, November 20, 2021

Post # 1062 Bengali Amarchitra Katha 246

                                                                        ডাউনলোড করুন

  জাতক হলো ভগবান বুদ্ধের অতীত বহু জন্মের কথা ও কাহিনী। বৌদ্ধদের মতে কেবলমাত্র এক জন্মের কর্মফলে কেউ সম্যকবুদ্ধ হতে পারেন না। ভগবান বুদ্ধ কোটিকল্পকাল ধরে বোধিসত্ত্বরূপে পশু, পাখি, মানুষ, দেবতা প্রভৃতি হয়ে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেন। এই সকল জন্মে দান, মৈত্রী, অহিংসা, পরোপকারিতা প্রভৃতি অনুষ্ঠানের দ্বারা তিনি নিজের চরিত্রের উৎকর্ষ সাধন করেন। বারবার জন্মগ্রহণ করে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে অবশেষে ‘বুদ্ধ’ বা ‘জ্ঞানী’ হন। ভগবান বুদ্ধের এই পূর্ববর্তী জন্মসমূহকে ‘বোধিসত্ত্ব-জন্ম’ বলা হয়। বৌদ্ধরা এই অবস্থাকে অভিসম্বুদ্ধ অবস্থা বলে। এই অবস্থায় বুদ্ধ জাতিস্মরতা লাভ করে তাঁর অতীত সব জন্মের কথা স্মরণ করতে পারতেন। পরে এই সব কথা শিষ্যদের শুনিয়ে তাদের ধর্মোপদেশ দান করতেন এবং তাদের চরিত্রের উৎকর্ষ সাধন করতেন।

জাতকের গল্পগুলি প্রাচীন ভারতের অমূল্য সম্পদ। আজ থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে রচিত জাতকের গল্পগুলি যেমন মনোগ্রাহী তেমনি শিক্ষনীয়। এছাড়া জাতকের গল্পগুলি সমসাময়িক যুগ ও সমাজের পটভূমিকায় রচিত হওয়ায় গল্পগুলি থেকে তৎকালীন সময় ও সমাজের এক সুপষ্ট প্রতিচ্ছবি পাওয়া যায়।

জাতকের গল্পসমূহ এমনই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল যে, তা আমাদের প্রাচীন গল্পকাহিনী যেমন- বৃহৎকথা, কথাসরিৎসাগর, হিতোপদেশ প্রভৃতিতে এর সুস্পষ্ট প্রভাব লক্ষ করা যায়। শুধু সংস্কৃত সাহিত্যে নয় আরব্য-রজনীর গল্পে, গ্রিক সাহিত্যে, ঈশপের গল্পে, ডেমোক্রিটাসের কুকুর ও প্রতিবিম্ব, প্লেটোর সিংহচর্মাচ্ছাদিত গর্দভ প্রভৃতি গল্পে এবং শেক্সপিয়ারের ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’-নাটকেও জাতকের প্রভাব লক্ষ করা যায়।

বিষয়ের মাধুর্য্য ও সহজ-সরল রচনাশৈলীর কারণে জাতকের গল্পগুলি আজও সমান জনপ্রিয়। জাতকের গল্প অ্যাপটিতে সেই চিরদিনের গল্পগুলিকে সহজ সরল ভাষায় নতুন করে পরিবেশন করার চেষ্টা করা হয়েছে। পাঠক-পাঠিকাদের ভালো লাগলে আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে বলে মনে করব।
Version: 1.0
এই সংস্করণে যে গল্পগুলি আছে-
• ধ্রুবসত্য জাতক
• বালুকাপথ জাতক
• সেরিবান জাতক
• চুল্লশ্রেষ্ঠী জাতক
• দেবধর্ম জাতক
• কাষ্ঠহারি জাতক
• মখাদেব জাতক
• সুখবিহারি জাতক
• লক্ষ্মণ জাতক
• ন্যগ্রোধমৃগ জাতক
• কণ্ডিনমৃগ জাতক
• বাতমৃগ জাতক
• মৃগমায়া জাতক
• মারুত জাতক
• মৃতকভক্ত জাতক
• নলপান জাতক
• কুরঙ্গমৃগ জাতক
• কুক্কুর জাতক
• অশ্ব জাতক
• তীর্থ জাতক
• মহিলামুখ জাতক
• পৌনপুনিক জাতক
• নন্দিবিলাস জাতক
• কৃষ্ণ জাতক
• মুনিক জাতক
• কুলায়ক জাতক
• নৃত্য জাতক
• শকুনি জাতক-১
• মৎস্য জাতক
• শকুনি জাতক-২
• তিতির জাতক
• বক জাতক
• নন্দ জাতক
• অঙ্গার জাতক
• মিত্রবিন্দক জাতক
• কপোত জাতক
• বেণুক জাতক
• মশক জাতক
• রোহিণী জাতক
• জলে আগুন জাতক
• সুবর্ণহংস জাতক
• বভ্রু জাতক
• গোধা জাতক
• কাক জাতক
• বিরোচন জাতক
• লাঙ্গুল জাতক
• রাধা জাতক
• পুষ্পরক্ত জাতক
• একপর্ণ জাতক
• সঞ্জীব জাতক
• রাজ-উপদেশ জাতক
• শূকর জাতক
• শৃগাল জাতক
• সুপর্ণ জাতক
• যক্ষ জাতক
• অলীনচিত্ত জাতক
• গুণ জাতক
• সুহনু জাতক
• ময়ূর জাতক
• বিনীলক জাতক
• ইন্দ্রসমানগোত্র জাতক
• সুসীম জাতক
• নকুল জাতক
• উপসাঢ় জাতক
• দেবকন্যা জাতক
• বর্তক জাতক
• বধির জাতক
• সিংহ-শৃগাল জাতক
• দুষ্ট বানর জাতক
• বানরতপস্বী জাতক
• কলাইমুষ্ঠি জাতক
• তিন্দুক জাতক






 

Friday, November 19, 2021

Post # 1061 Bengali Amarchitra Katha 244

                                                                       ডাউনলোড করুন          

 

"খ্রিস্টপূর্ব নবম হতে অষ্টম শতাব্দীতে পান্ডবরা কৌরবদের চক্রান্তের শিকার হয়ে ১২ বছরের বনবাস ও ১ বছরের অজ্ঞাতবাসে যেতে বাধ্য হন এবং মৎস্য দেশের রাজা বিরাটের রাজধানীর এ স্থানটিতে ছদ্ম বেশে বসবাস শুরু করেন।
        

বনপর্ব মহাভারত মহাকাব্যের আঠারোটি পর্বের মধ্যে তৃতীয় পর্ব। বনপর্বের মধ্যে ২১ টি উপপর্ব ও ৩২৪ টি অধ্যায় আছে। এটি মহাভারতের বড় পর্বগুলোর একটি। এই পর্বে পাণ্ডবদের দ্বাদশবর্শব্যাপী বনবাস কাল, তাদের বিভিন্ন ঋষির সংস্পর্শে অর্জিত শিক্ষা এবং সেসব শিক্ষা তাদের চরিত্র গঠনে কীভাবে সাহায্য করেছিল তা বর্ণিত হয়েছে। মহাভারতের এই অন্যতম দীর্ঘ পর্বে নীতি-নৈতিকতা ও পাপ-পুণ্যের বিষয়ে অনেক আলোচনা আছে। এছাড়া এই পর্বে নানা উপাখ্যান যেমন "অজগর - যুধিষ্ঠির সংবাদ", "শ্যেন - কপোত উপাখ্যান", "নল - দময়ন্তীর উপাখ্যান" ও সাবিত্রি - সত্যবানের উপাখ্যান বর্ণিত হয়েছে। 

 

গঠনশৈলী ও অধ্যায়সমূহ

১। আরণ্যকপর্ব
যুধিষ্ঠির ও অনুগামী ব্রাহ্মণগণ - সূর্যদত্ত তাম্রস্থালী
ধৃতরাষ্ট্রের অস্থিরমতি
ধৃতরাষ্ট্র সকাশে ব্যাসমৈত্রেয়
২। কির্মীরবধপর্ব
কির্মীরবধের বৃত্তান্ত
৩। অর্জুনাভিগমনপর্ব
কৃষ্ণের আগমন - দ্রৌপদীর ক্ষোভ
শাল্ববধের বৃত্তান্ত - দ্বৈতবন
দ্রৌপদী ও যুধিষ্ঠিরের বাদানুবাদ
ভীম ও যুধিষ্ঠিরের বাদানুবাদ - ব্যাসের উপদেশ
অর্জুনের দিব্যাস্ত্র সংগ্রহে গমন
৪। কৈরাতপর্ব
কিরাতবেশী মহাদেব - অর্জুনের দিব্যাস্ত্র লাভ
দময়ন্তী ও রাজহংস
দময়ন্তী ও রাজহংস
৫। ইন্দ্রলোকাভিগমনপর্ব
ইন্দ্রলোকে অর্জুন - উর্বশীর অভিসার ও অর্জুনকে অভিশাপ
৬। নলোপাখ্যানপর্ব
ভীমের অধৈর্য - মহর্ষি বৃহদশ্ব
নিষধরাজ নল - দময়ন্তীর স্বয়ম্বর ও নলকে পতিরূপে বরণ
কলির আক্রমণ - নল ও পুষ্করের দ্যূতক্রীড়া
নল - দময়ন্তীর বিচ্ছেদ - দময়ন্তীর পর্যটন
কর্কোটক নাগ - মলের রূপান্তর
প্ত্রালয়ে দময়ন্তী - নল ও ঋতুপর্ণের বিদর্ভযাত্রা
নল ও দময়ন্তীর পুনর্মিলন
নলের রাজ্যোদ্ধার
৭। তীর্থযাত্রাপর্ব
যুধিষ্ঠিরাদির তীর্থযাত্রা
ইল্বল - বাতাপি - অগস্ত্য ও লোপামুদ্রা - ভৃগুতীর্থ
দধীচি - বৃত্রবধ - সমুদ্রশোষণ
সগররাজা - ভগীরথের ভূতলে গঙ্গানায়ন
ঋষ্যশৃঙ্গের উপাখ্যান
পরশুরামের ইতিহাস - হৈহয়াধিপতি কার্তবীর্যার্জুন
প্রভাস - চ্যবন ও সুকন্যা - অশ্বিনীকুমারদ্বয়
মান্ধাতা, সোমক ও জন্তুর ইতিহাস
উশীনর, কপোত ও শ্যেন
উদ্দালক, শ্বেতকেতু, কহোড়, অষ্টাবক্র ও বন্দী
ভরদ্বাজ, যবক্রীত, রৈভ্য, অর্বাবসু ও পরাবসু
নরকাসুর - বরাহরূপী বিষ্ণু - বদরিকাশ্রম
সহস্রদলপদ্ম - ভীম - হনুমান সংবাদ
ভীমের সুবর্ণপদ্ম সংগ্রহ
৮। জটাসুরবধপর্ব
জটাসুরবধ
৯। যক্ষযুদ্ধপর্ব
ভীমের সহিত যক্ষ - রাক্ষসাদির যুদ্ধ
১০। নিবাতকবচযুদ্ধপর্ব
অর্জুনের প্রত্যাবর্তন - নিবাতকবচ ও হিরণ্যপুরের বৃত্তান্ত
১১। আজগরপর্ব
অজগর, ভীম ও যুধিষ্ঠির
১২। মার্কণ্ডেয়সমস্যাপর্ব
কৃষ্ণ ও মার্কণ্ডেয়র আগমন - অরিষ্টনেমা ও অত্রির কথা
বৈবস্বত মনু ও মৎস্য - বালক্রূপী নারায়ণ
পরীক্ষিৎ ও মণ্ডুকরাজকন্যা - শল, দল ও বামদেব
দীর্ঘায়ু বক ঋষি - শিবি ও সুহোত্র - যযাতির দান
অষ্টক, প্রতর্দন, বসুমনা ও শিবি - ইন্দ্রদ্যুম্ন
ধুন্ধুমার
কৌশিক, পতিব্রতা ও ধর্মব্যাধ
দেবসেনা ও কার্তিকেয়
১৩। দ্রৌপদীসত্যভামাসংবাদপর্ব
দ্রৌপদী ও কৃষ্ণপত্নী সত্যভামার কথোপকথন
মুদ্গলের স্বর্গপ্রত্যাখ্যান
মুদ্গলের স্বর্গপ্রত্যাখ্যান
১৪। ঘোষযাত্রাপর্ব
দুর্যোধনের ঘোষযাত্রা ও গন্ধর্বহস্তে নিগ্রহ
দুর্যোধনের প্রয়োপবেশন
দুর্যোধনের বৈষ্ণবযজ্ঞ
১৫। মৃগস্বপ্নদ্ভব ও ব্রীহিদ্রৌণিকপর্ব
যুধিষ্ঠিরের স্বপ্ন - মুদ্গলের সিদ্ধিলাভ
১৬। দ্রৌপদীহরণপর্ব
দুর্বাসার পারণ
জয়দ্রথ কর্তৃক দ্রৌপদীহরণ
১৭। জয়দ্রথবিমোক্ষণপর্ব
জয়দ্রথের নিগ্রহ ও মুক্তি
সাবিত্রি ও সত্যবান
সাবিত্রি ও সত্যবান
১৮। রামোপাখ্যানপর্ব
শ্রীরামের উপাখ্যান
১৯। পতিব্রতামাহাত্ম্যপর্ব
সাবিত্রি - সত্যবান উপাখ্যান
২০। কুণ্ডলাহরণপর্ব
কর্ণের কবচ - কুণ্ডল দান
২১। আরণ্যেয়পর্ব
যক্ষ - যুধিষ্ঠিরের প্রশ্নোত্তর
ত্রয়োদশ বৎসরারম্ভ

                                               


পঞ্চ-পান্ডবদের অজ্ঞাত বাসের সময় তাঁদের ছদ্মনাম

মহাভারতের বিরাট পর্ব্বে পঞ্চ-পাণ্ডবের ও দ্রৌপদীর অজ্ঞাত বাসের সময় তাঁরা প্রকাশ্যভাবে নিজের নিজের একটা করে নাম রেখেছিলেন । সেগুলি হল , যথাক্রমে -
যুধিষ্ঠির - কঙ্ক
ভীম - বল্লব
অর্জুন - বৃহন্নলা
নকুল - গ্রন্থিক
সহদেব - তন্তিপাল
দ্রৌপদী - সৈরন্ধ্রী
যুধিষ্ঠির নিজেদের মধ্যে আহ্বান বা সম্বোধনের জন্য তাঁদের প্রত্যেকের একটি করে গুপ্ত নাম রেখেছিলেন । সেগুলি হল , যথাক্রমে -
যুধিষ্ঠির - জয়
ভীম - জয়ন্ত
অর্জুন - বিজয়
নকুল - জয়ৎসেন
সহদেব - জয়দ্বল
দ্রৌপদী - মালিনী
পঞ্চ-পাণ্ডব ও দ্রৌপদী এক বৎসর অজ্ঞাত বাসের সময় এই ছদ্মনাম ও গুপ্তনামগুলি নিজেদের পরিচয়ের জন্য ব্যবহার করেছিলেন । 
 
তথ্য সূত্র  https://www.wikiwand.com