Monday, August 31, 2020

Post # 994 Bengali Amarchitra Katha 051

                                                                        ডাউনলোড করুন




দীপিকার নাক কাটার হুমকি যারা দিয়েছিল, মনে হচ্ছে, নাকের বদলে নরুন পেয়ে টাক ডুমাডুম বাদ্যি বাজিয়ে তাদের হয়তো সন্তুষ্ট থাকতে হবে। কেননা, সবকিছু ঠিকঠাক এগোলে কাটা যাবে ‘পদ্মাবতী’র দীর্ঘ ই-কার। ‘পদ্মাবতী’র রূপান্তর ঘটে প্রকাশ পাবে ‘পদ্মাবত’। সূর্পণখা হতে হবে না দীপিকাকে।

সেন্সর বোর্ডের এই সমঝোতা সূত্র অবশ্য রাজস্থানের করণি সেনার না-পছন্দ। তারা সিনেমাটা নিষিদ্ধ করার দাবিতে এখনো অনড়।

ঝাঁসিবাসীর মধ্যে অবশ্য এ নিয়ে কোনো হেলদোল নেই। তাদের ভাবনাজুড়ে শুধু তাদের হৃদয়ের রানির সম্মান। প্রার্থনা একটাই, রানির কোনো রকম সম্মানহানি যেন না হয়।

উত্তর প্রদেশের যে অংশটা মধ্যপ্রদেশের ঘাড় বেয়ে নেমে এসেছে, ঝাঁসি জায়গাটা ঠিক সেখানে। সেখানকার লোকজনের মনে রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের আসন কতটা পরিপাটি করে পাতা, ঝাঁসি না গেলে তা বোঝা যেত না। পদ্মাবতী অথবা পদ্মিনীর সঙ্গে লক্ষ্মীবাঈয়ের তুলনাতেও শহরবাসী আগ্রহী নয়। রানি পদ্মিনী বা পদ্মাবতী কতটা বাস্তব ও কতটাই বা কল্পনা, তা নিয়ে বিতর্ক বিস্তর। লক্ষ্মীবাঈয়ের অস্তিত্ব, বীরত্ব ও নাতিদীর্ঘ জীবনের ইতিহাস নিয়ে কিন্তু বিতর্কের বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই।

দীপিকা পাড়ুকোন যেমন ‘পদ্মাবতী’, কঙ্গনা রানাবত তেমনই ঝাঁসির রানি। কিন্তু লক্ষ্মীবাঈয়ের আদি নাম যে ‘মণিকর্ণিকা’, আগে তা জানা ছিল না। গাইডের ব্যাখ্যা এই রকম, লক্ষ্মীবাঈয়ের জন্ম বারানসিতে। বারানসির বিখ্যাত মণিকর্ণিকা ঘাটে বাবা কাজ করতেন। সেই ঘাটের নামেই মেয়ের নাম রেখেছিলেন। ‘মণিকর্ণিকা’ ক্রমে ছোট হয়ে হলো ‘মনু’। মাত্র ১৪ বছর বয়সে ঝাঁসির রাজা গঙ্গাধর রাওয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়ে গেল মনুর। সেই থেকে ‘মণিকর্ণিকা’ অস্তে গেল। উদয় হলেন রানি লক্ষ্মীবাঈ।

ঝাঁসির গাইডদের মুখে রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের মাহাত্ম্য ও মনে বাসা বেঁধেছে ‘মণিকর্ণিকা’র প্রতীক্ষা। হবে নাইবা কেন? ৩০ বছর পূর্ণ না-হওয়া কোনো রমণী শিশুসন্তানকে পিঠে বেঁধে ঘোড়ার লাগাম দাঁতে চেপে দুহাতে খোলা তলোয়ার নিয়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, সতী-সাবিত্রীর দেশ ভারতে এমন ছবি যে বিরল। সেই ছবি যদি জীবন্ত হয়ে চোখের সামনে ভেসে ওঠে, ইতিহাস তাহলে কল্পনার জগৎ থেকে বাস্তবে নেমে আসে। সিপাহি বিদ্রোহ যদি হয়ে থাকে ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের প্রথম সংগ্রাম, অনন্যা বীরাঙ্গনা লক্ষ্মীবাঈ তাহলে দেশের প্রথম নারী স্বাধীনতাযোদ্ধা। বইয়ের পাতা থেকে সিনেমার পর্দায় ইতিহাসের সেই নেমে আসার প্রতীক্ষায় দিন গুনছে গোটা ঝাঁসি। শুধু ঝাঁসিই বা বলি কী করে, প্রতীক্ষায় রয়েছে দেশের স্বাধীনতাকামী তামাম নারীসমাজ।

তাঁকে নিয়ে ঝাঁসিবাসীর গর্বের কারণ বহু। স্বামীর মৃত্যুর পর রাজপাট সামলেছেন। প্রজাদের মঙ্গলের চেষ্টা করে গেছেন আমৃত্যু। আরও অনেকের মতো আত্মহননের পথে এগোননি। জহরব্রত পালন করেননি। ভীরু মনে দুবেলা মরার অপেক্ষা করেননি। বরং ঝাঁসিকে স্বাধীন রাখতে হাতে তুলে নিয়েছেন অস্ত্র। গড়ে তুলেছেন প্রমীলা বাহিনী। যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাপতির ভূমিকা নিয়েছেন। এবং লড়তে লড়তে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গোয়ালিয়রের এক প্রান্তে পৌঁছে নদীর কিনারে এক সাধুকে অনুরোধ করেছেন তাঁর জন্য চিতা সাজাতে। লক্ষ্মীবাঈ চাননি ইংরেজরা তাঁর কেশাগ্র স্পর্শ করুক। করতেও পারেনি।

মাত্র দেড় শ বছর আগের ঘটনা। ১৮২৮ সালের ১৯ নভেম্বর জন্ম, মৃত্যু ১৮৫৮ সালের ১৮ জুন। ক্ষণজন্মা নারীর ক্ষণিকের জীবন!

সাহস ও বীরত্ব তো বটেই, রানি লক্ষ্মীবাঈ আজকের দিনে আরও প্রাসঙ্গিক তাঁর অত্যাধুনিক মন ও ধর্মনিরপেক্ষ মানসিকতার জন্য। হিন্দু ও মুসলমানে কোনো বিভেদ কোনো দিন তিনি করেননি। তাঁর রাজত্বে মন্দির-মসজিদ পাশাপাশি তৈরি যেমন হয়েছে, তেমনই পূর্ণ দায়িত্বে বহাল রেখেছিলেন মুসলমান সেনাপতিদের। দুর্গ রক্ষার যুদ্ধে নিহত মুসলমান ও হিন্দু যোদ্ধাদের যে অশ্বত্থগাছের তলায় কবর ও দাহ করা হয়েছিল, প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসের মেলায় দুই ধর্মের মানুষ সেখানে জড়ো হন শ্রদ্ধা জানাতে। আজ পর্যন্ত কোনো তিক্ততা দেখা যায়নি।

দুর্গে প্রতিদিন সন্ধেয় আলো ও ধ্বনির মূর্ছনায় জীবন্ত হয়ে ওঠে দেড় শ বছর আগের ঝাঁসির ইতিহাস ও রানির জীবন-আলেখ্য। ভাষ্যপাঠে দিকপাল অভিনেতা ওমপুরী ও অভিনেত্রী সুস্মিতা সেন। গাইড বললেন, রানির ভূমিকায় কণ্ঠদানের জন্য সুস্মিতা একটা টাকাও গ্রহণ করেননি। কেন বলুন তো?

উত্তরটাও গাইডই দিলেন। ‘রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের মতো সুস্মিতা সেনেরও জন্ম ১৯ নভেম্বর। তাই। এত সম্মান ও ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে তৈরি সিনেমা যেন ‘পদ্মাবতী’র মতো অনাবশ্যক কোনো বিতর্ক ও বিড়ম্বনা সৃষ্টি না করে। আমাদের প্রার্থনা ও কামনা এটুকুই।’

তথ্য সূত্র   www.prothomalo.com




 

8 comments:

  1. Dada 1000 no. Post konta hobe?
    Sob thik thakle "Drona" howa uchit.
    Naki surprise?
    "Guru Nanak" kintu banglay old print e ache. (Courtesy Nil dar blog.)
    Anyway, thanks for another wonderful Comics.

    ReplyDelete
    Replies
    1. একটা স্পেসাল কিছু দেবো ।

      Delete
  2. Khub bhalo content post korechen, apnar blog er page gulo screen capture kore ekta pdf toiri korechhi, mone hoy bhalo history note hoye jabe. Diamond Comics ki abar publish kora hochchhe... Amazon e dekhlam, tobe khub besi price...

    ReplyDelete
    Replies
    1. ডায়মন্ড এর ও কপিরাইট শেষ , অবৈধ ভাবে ছেপে পুরানো বই এর মতো প্রিন্ট করে উপরে স্টিকার মেরে সেল করছে ।

      Delete
  3. অমর চিত্র কথার সাথে পরিচয় এই ঝাঁসির রানি দিয়ে। অসাধারণ একটা কমিকস। কত অসংখ্য বার যে পড়েছি তার ইয়ত্তা নেই। অনেক ধন্যবাদ দাদা।

    ReplyDelete